সোনার দামে নয়া রেকর্ড, প্রায় লাখের দোরগোড়ায় হলুদ ধাতু!

Gold price today: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে অস্থিরতা বাড়ানোর সাথে সাথে দেশের কমোডিটি বাজারে সোনার দাম নতুন…

Gold Prices Hike Again for the Second Consecutive Day

Gold price today: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে অস্থিরতা বাড়ানোর সাথে সাথে দেশের কমোডিটি বাজারে সোনার দাম নতুন রেকর্ডে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, এমসিএক্স সোনার এপ্রিল ৪ কন্ট্র্যাক্ট ₹৮৮,৪১৮-এর সর্বোচ্চ দামে পৌঁছায়, যা এক নতুন ঐতিহাসিক স্তর। সকাল ৯:৪৫-এর দিকে সোনার দাম ₹৮৮,৩৮৫ প্রতি ১০ গ্রাম এ ০.৪১% বৃদ্ধি পেয়েছিল।

বিশ্ব বাজারে সোনার দামও রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম $৩,০১২.০৫ প্রতি আউন্স ছিল, যখন বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির কারণে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কায় সুরক্ষিত সম্পদ হিসেবে সোনাকে বেছে নিচ্ছেন।

   

এখন মনোযোগ কেন্দ্রিত হচ্ছে ১৯ মার্চের মার্কিন ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির (FOMC) বৈঠকের ফলাফলের দিকে। ফেডের তরফ থেকে নীতির হার অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা থাকলেও, এক শক্তিশালী ফেড তাদের আগ্রাসী নীতির কারণে সোনার দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

বিশ্ব বাজারে সোনার দাম বাড়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনার দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। যখনই পৃথিবীজুড়ে কোনো বড় আর্থিক সমস্যা বা রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়, সোনার দাম সাধারণত বেড়ে যায়, কারণ এটি একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হয়। বিশেষত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সোনার চাহিদা আরও বাড়াচ্ছে।

অন্যদিকে, উচ্চ সুদের হার সোনার জন্য বিরোধী হতে পারে। যখন মার্কিন ফেড তাদের সুদের হার বাড়ায়, তখন নির্দিষ্ট আয়ের সম্পদ যেমন বন্ড বা সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ভাল রিটার্ন পাওয়া যায়, ফলে সোনার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ কমে যায়। এর ফলে সোনার দাম কিছুটা স্থির হতে পারে, তবে ফেডের আগ্রাসী নীতি প্রয়োগ না করার কারণে সোনার দাম এখনো চড়া।

একই সময়ে, ডলার সূচকের পতন সোনার দাম বৃদ্ধিতে আরও ভূমিকা পালন করছে। ১০৭ থেকে ১০৩.৫০-এর মধ্যে ডলার সূচকের পতন দেখিয়েছে, যা সোনার দাম বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। এছাড়া, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও সোনা কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে, যা সোনার বাজারে আরও চাপ সৃষ্টি করছে।

মটিলাল অসওয়াল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের কমোডিটি রিসার্চের সিনিয়র অ্যানালিস্ট মানব মোদি জানান, ‘‘একাধিক ফ্যাক্টর সোনার দাম বাড়ানোর জন্য দায়ী। একটি বড় কারণ হল ডলার সূচকের পতন। সেগুলির পাশাপাশি, ট্যারিফ যুদ্ধের অনিশ্চয়তা এবং সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার প্রবণতা সোনার দাম বাড়াচ্ছে।’’

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সোনার দাম কি খুব শীঘ্রই ₹১ লক্ষ প্রতি ১০ গ্রাম ছুঁতে পারে? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি পুরোপুরি নির্ভর করবে মার্কিন ফেডের নীতির ওপর এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর। যদি মার্কিন ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখে এবং ট্যারিফ যুদ্ধের চাপ বাড়তে থাকে, তবে সোনার দাম ₹১ লক্ষের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কিন্তু, এটি নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না, কারণ বাজারের অবস্থা এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। সোনার দাম কখনো কখনো শক্তিশালী অবস্থানেও কিছুটা পতন ঘটতে পারে যদি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সুদৃঢ় হয় এবং বাজারে নিরাপদ সম্পদের চাহিদা কমে যায়।