Onion Price: পেঁয়াজের ঝাঁঝে নয়, দাম শুনেই চোখে জল আমজনতার!

সম্প্রতি পাইকারি বাজারে বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও গত মাসে দেশের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে…

Wholesale Prices Rise, Concerns Grow Over Onion and Fruit Price Hikes

সম্প্রতি পাইকারি বাজারে বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও গত মাসে দেশের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল, তবুও পাইকারি বাজারে দাম বাড়ানোর প্রভাব ক্রেতাদের উপর পড়ে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ, ফল ও আলুর দাম এখনও কৃষিপণ্যের মধ্যে অন্যতম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ২.৩৮% পৌঁছেছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ২.৩১%। গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় এই বৃদ্ধি অনেকটাই কম, যখন এটি ছিল মাত্র ০.২%। যদিও এই বৃদ্ধি সংখ্যার হিসেবে কম, তবুও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল, ফল এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি চরম আকার ধারণ করেছে।

   

পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম গত এক বছরে ৪৮.০৫% বেড়েছে, যা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। কৃষকদের দিক থেকে এটি একটি বড় সমস্যা, কারণ পেঁয়াজের দাম এমনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, সাধারণ মানুষের জন্য এটি ক্রয় করা কঠিন হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি, ভোজ্য তেলের দাম ৩৩.৫৯%, ফলের দাম ২০.৮৮% এবং তৈরি খাদ্যপণ্যের দাম ১১.০৬% বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে, আলুর দাম গত বছর যে মাত্রায় বেড়েছিল, তা কিছুটা কমলেও এখনও ২৭.৫৪% বেড়েছে। আলুর দাম বৃদ্ধির এই ধারা দীর্ঘমেয়াদীভাবে খুচরো বাজারে ক্রেতাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা আর্থিক চাপ তৈরি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি এই মূল্যবৃদ্ধি চলতে থাকে, তবে তা শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কপালে চাপ ফেলবে।

যদিও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কমার কারণে খুচরো বাজারে গত মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার ৩.৬১% কমে এসেছে, তবুও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকতে বলছেন। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ানোর প্রভাব খুচরো বাজারে কিছুটা সময় পরে পড়লেও, একবার যদি তা প্রতিফলিত হয়, তবে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় তার প্রভাব পড়বে।

এছাড়া, অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি উদ্বেগজনক। বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানো দরকারি খাদ্যশস্যের উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে এবং খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। তাপপ্রবাহের মতো মৌসুমি পরিবর্তনও আগামী মাসগুলিতে এই মূল্যবৃদ্ধিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যার প্রভাব পুরো খাদ্যপ্রক্রিয়াতে পড়বে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, খাদ্য ও জ্বালানি বাদে কোর ইনফ্লেশন (মূল মূল্যবৃদ্ধি) বর্তমানে ১.৩% পৌঁছেছে, যা গত ২৪ মাসে সর্বোচ্চ। এই পরিসংখ্যানও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ কোর ইনফ্লেশন বৃদ্ধি পাওয়া মানে খাদ্যের বাইরে অন্য সব পণ্যের দামও বাড়ছে, যা পুরো অর্থনৈতিক কাঠামোকে প্রভাবিত করবে।

বর্তমানে, সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, এবং আশা করা হচ্ছে যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এপ্রিলের ঋণনীতিতে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে, পাইকারি বাজারের প্রভাব খুচরো বাজারে কবে পড়বে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খুচরো বাজারে দাম বাড়লে, এর প্রভাব সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানের ওপর পড়বে।

এই পরিস্থিতিতে সরকারকে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আরও কড়াভাবে নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে পেঁয়াজ এবং ফলের দাম নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। একদিকে, খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, অন্যদিকে, কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থায় উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।