আজ, ১৮ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার, পশ্চিমবঙ্গের সবজির বাজারে দামের একটি মিশ্র প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন খুচরো ও পাইকারি বাজার থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, কিছু সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও, অন্যান্য কিছুর দামে সামান্য বৃদ্ধি বা হ্রাস দেখা গেছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন, সরবরাহের ওপর প্রভাব এবং চাহিদার তারতম্য এই দামের ওঠানামার পিছনে প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কলকাতার খুচরো বাজারে আজ সকালে আলুর দাম কেজি প্রতি ২৮-৩২ টাকার মধ্যে রয়েছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় স্থিতিশীল। পেঁয়াজের দামও তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে, কেজি প্রতি ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে টমেটোর দামে সামান্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে—এটি এখন ৮০-১০০ টাকা প্রতি কেজি। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দক্ষিণবঙ্গে সাম্প্রতিক আর্দ্র আবহাওয়া এবং বৃষ্টির কারণে স্থানীয় সরবরাহে কিছুটা বাধা পড়েছে, যা টমেটোর দাম বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে, সবুজ শাকসবজির মধ্যে পালং শাক ২৫-৩০ টাকা প্রতি আঁটি এবং লাউ ৪০-৫০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের দাম কেজি প্রতি ৬৫-৭৫ টাকা এবং ঝিঙে ৭০-৮০ টাকার মধ্যে রয়েছে। এই দামগুলো গত কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বেশি, কারণ আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার ফলে কৃষকদের ফসল তুলতে সমস্যা হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং হাওড়ার মতো জেলাগুলোতে সবজির দাম কলকাতার সঙ্গে প্রায় মিলে যাচ্ছে। তবে স্থানীয় বাজারে কাঁচা লঙ্কার দাম বেশি চোখে পড়েছে—কেজি প্রতি ১৫০-২০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, লঙ্কার উৎপাদন কম হওয়ায় এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে দাম বেশি। এছাড়া, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম কেজি প্রতি ৪০-৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের বাজারে সবজির দাম তুলনামূলকভাবে কম। আলু কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৩৮-৪২ টাকা এবং টমেটো ৭০-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এই অঞ্চলে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় স্থানীয় সরবরাহে তেমন বাধা পড়েনি। তবে কিছু সবজি, যেমন গাজর (৫০-৬০ টাকা/কেজি) এবং মটরশুঁটি (৮০-১০০ টাকা/কেজি), অন্যান্য জেলা থেকে আনতে হচ্ছে, যার ফলে দাম কিছুটা বেশি। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক আর্দ্রতা এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহে সামান্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এছাড়া, আইপিএলের মতো বড় ইভেন্টের জন্য পরিবহন ব্যবস্থায় চাপ বাড়ায় কিছু সবজির দামে প্রভাব পড়েছে। যেমন, কলকাতায় আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচ (২২ মার্চ) এর আগে পরিবহনের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বাজার দরের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
সাধারণ মানুষের জন্য এই দাম বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।
রাজ্য সরকারের কৃষি বিপণন বিভাগ সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। সুফল বাংলার মতো উদ্যোগের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে সবজি সরবরাহের চেষ্টা চলছে। ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফা রোধে কঠোর পদক্ষেপের কথাও ভাবা হচ্ছে। আজ পশ্চিমবঙ্গে সবজির দাম মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে, তবে কিছু আইটেমে বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের পকেটে চাপ ফেলছে। আবহাওয়া ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে আগামী দিনে দামের ওঠানামা হতে পারে। বাজারে স্থিতিশীলতার জন্য সবাই আশায় রয়েছে।