Mohun Bagan SG: শিল্ড জিতেও নতুন নজির গড়ল বাগান সমর্থকরা, তালিকায় মশাল জ্বালাল ইস্টবেঙ্গল

ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ২০২৪-২৫ মরসুমে (ISL 2024-25 Session) ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শিল্ড (League Shield) জিতে ইতিহাস গড়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan SG)। এবার…

Mohun Bagan SG Delighted as Bagnan Club Celebrates Durga Puja with Mohun Bagan-Themed Pandal

ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ২০২৪-২৫ মরসুমে (ISL 2024-25 Session) ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শিল্ড (League Shield) জিতে ইতিহাস গড়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan SG)। এবার কেবল মাঠে নয়, দর্শকসংখ্যার নিরিখেও অন্য দলগুলিকে পিছনে ফেলেছে বাগান সমর্থকরা (Mohun Bagan SG Supporters)। এশিয়ার ফুটবল ক্লাবগুলির মধ্যে দর্শক উপস্থিতির গড়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে শতাব্দী প্রাচীন এই ক্লাব। এদিকে, ইস্টবেঙ্গলও (East Bengal FC) দর্শকসংখ্যায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিয়ে চমক দিয়েছে।

মোহনবাগান গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ওডিশা এফসিকে হারিয়ে লিগ শিল্ড নিশ্চিত করে। এরপর ৮ মার্চ এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে শিল্ড হাতে তুলে নেয় তারা। এখন তাদের লক্ষ্য সেমিফাইনাল। তবে শুধু শিরোপা নয়, দর্শকসংখ্যার দিক থেকেও মোহনবাগান অনন্য নজির স্থাপন করেছে। আইএসএলের হিসাব অনুযায়ী, ১২টি হোম ম্যাচে মোট ৪,২৮,৯৩৩ জন দর্শক মাঠে এসেছেন। অর্থাৎ, প্রতি ম্যাচে গড়ে ৩৫,৭৪৪ জন। গত মরশুমের ৩৪,৭৯০-এর রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এই সংখ্যা মোহনবাগানকে এশিয়ার শীর্ষ পাঁচে নিয়ে গেছে।

   

এই তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ইরানের পার্সেপোলিস এফসি (৪৩,৩৩৩), তারপর জাপানের উরাওয়া রেড ডায়মন্ডস (৪৩,১৩৯), চিনের চেংডু রংচেং এফসি (৪০,৮৬৭) এবং সাংহাই শেনহুয়া এফসি (৩৯,৩৮৫)। মোহনবাগান এদের ঠিক পরেই।

এশিয়ার হেভিওয়েট ক্লাবগুলির মধ্যে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর আল নাসর এই তালিকায় প্রথম পাঁচে জায়গা করে নিতে পারেনি। মোহনবাগানের এই কৃতিত্ব সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। বিশেষ করে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ওডিশা এফসির বিরুদ্ধে প্রায় ৫৮,০০০ এবং গোয়ার বিরুদ্ধে ৬১,৫৯১ দর্শকের উপস্থিতি এই মরসুমে উন্মাদনার প্রমাণ। তবে গুয়াহাটিতে সরিয়ে নেওয়া দ্বিতীয় পর্বের ডার্বিতে দর্শকসংখ্যা ছিল সর্বনিম্ন—মাত্র ২,৫৬৭।

ইস্টবেঙ্গলও দর্শকসংখ্যায় পিছিয়ে নেই। আইএসএলে লিগ তালিকায় নবম স্থানে থাকলেও, তাদের ১২টি হোম ম্যাচে মোট ২,২১,১৬৯ জন দর্শক এসেছেন। গড়ে প্রতি ম্যাচে ১৮,৪৩১ জন। এই সংখ্যা মোহনবাগানের তুলনায় কম হলেও, গত মরসুমের তুলনায় উন্নতি লক্ষণীয়। প্রথম পর্বের ডার্বিতে ৫৯,৮৭২ জন দর্শকের উপস্থিতি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উৎসাহের চিত্র তুলে ধরে। আইএসএলের দর্শকসংখ্যার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেরল ব্লাস্টার্স। তাদের গড় দর্শকসংখ্যা ১৫,৮৯৪। কিন্তু গত বছরের তুলনায় ৪২ শতাংশ দর্শক কমেছে, যা দলের দুর্বল পারফরম্যান্সের ফল।

দর্শকসংখ্যা বৃদ্ধির দিক থেকে বিরাট লাফ দিয়েছে নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি। তাদের গড় দর্শকসংখ্যা ১০,৫২৬, যা গত সিজনের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। শিলংয়ে আয়োজিত ম্যাচগুলিতে দর্শকদের ভিড় এই উত্থানের বড় কারণ। এছাড়া বেঙ্গালুরু, ওডিশা এবং গোয়ার দর্শকসংখ্যাও বেড়েছে। প্রথমবার আইএসএলে খেলা মহমেডানের ম্যাচে গড়ে ৪,০৯৫ জন দর্শক এসেছেন। তবে সামগ্রিকভাবে আইএসএলের দর্শকসংখ্যা গত মরসুমের তুলনায় ৩.৫ শতাংশ কমেছে।

মোহনবাগানের শিল্ড জয়ের পর ক্লাব তাঁবুতে উৎসবের আমেজ। গোষ্ঠ পাল সরণিতে সমর্থকদের ভিড় বাড়ছে। এই আনন্দের মধ্যেই দর্শকসংখ্যার এই নজির তাদের উচ্ছ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সমর্থক বলেন, “মোহনবাগান শুধু মাঠে নয়, দর্শকদের হৃদয়েও জায়গা করে নিয়েছে। এশিয়ার শীর্ষ পাঁচে থাকা আমাদের গর্বের।” ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও দলের উন্নতির জন্য আশাবাদী।

বিশ্লেষকদের মতে, মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের দর্শকসংখ্যা ভারতীয় ফুটবলের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। তবে আইএসএলের সামগ্রিক দর্শক হ্রাস অন্য দলগুলির পারফরম্যান্স এবং প্রচারের দিকে নজর দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়। আগামী সেমিফাইনালে মোহনবাগানের পারফরম্যান্স এবং দর্শকদের উপস্থিতি কী রকম হয়, সেদিকে নজর থাকবে সকলের।