ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের (Humayun Kabir) “ঠুসে দেব” মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির অসন্তোষ এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তির প্রস্তুতি রাজনৈতিক মহলে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীকে লক্ষ্য করে হুমায়ুন কবীরের (Humayun Kabir) এই মন্তব্য অত্যন্ত বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যা এখন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির নজরে এসেছে।
শুভেন্দু অধিকারীর মুসলিম বিধায়কদের ‘চ্যাংদোলা করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা’ মন্তব্যের পর হুমায়ুন কবীর(Humayun Kabir) পালটা বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “মাসল শো অফ করতে আসলে রসগোল্লা খাওয়াব নাকি? ঠুসে দেব। ক্ষমতা থাকলে মুর্শিদাবাদে আসুন, দেখে নেব।”
এই মন্তব্যে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি এবং দলের নেতৃত্বের মধ্যে গভীর অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূল শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি দ্রুত শোকজ দেয় হুমায়ুন কবীরকে, এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার জবাবও চাওয়া হয়। শনিবার শোকজের জবাবে হুমায়ুন কবীর তাঁর অবস্থান অটুট রেখেছেন এবং দলীয় নির্দেশনা মেনে চলতে অনাগ্রহী ছিলেন। তিনি জানিয়ে দেন, তার মন্তব্য ব্যক্তিগত এবং তা কোনোভাবেই দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নয়। তার মতে, “এটা তাঁর জাতিগত অধিকার, এবং এখানে কোনো সংবিধান ভঙ্গ করা হয়নি।”
তবে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির শীর্ষ নেতারা এই জবাবে অসন্তুষ্ট। সোমবার, দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বৈঠক করেন এবং তারপরে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দেন, “হুমায়ুনের মন্তব্য দলের আদর্শের পরিপন্থী। একজন বিধায়ক হিসেবে, এমন মন্তব্য করা তার উচিত হয়নি। তিনি যে যা বলছেন, তা ব্যক্তিগত বিষয় হলেও, তা দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যায়। শোকজের জবাব সন্তোষজনক নয়।”
এখন, দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি হুমায়ুন কবীরকে মঙ্গলবার সশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। বৈঠকে তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আরও জানান, “যতই মন্তব্য ব্যক্তিগত হোক, এক একজন বিধায়ক হিসেবে তার দায়িত্ব রয়েছে দলের আদর্শ মেনে চলা। দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে, এবং এটা করতে না পারলে শাস্তি নিশ্চিত।”
হুমায়ুনের শাস্তি বা পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে, তা নিয়ে অনেকেই অনুমান করছেন। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে তার মন্তব্য এবং দলীয় আদর্শের বিরোধিতার কারণে কি তিনি দলের শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে বড় কোনো সিদ্ধান্তে আসবেন? না কি, দলীয় নির্দেশ পালন করে স্বীকার করবেন ভুল?
এখনই এই প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কার হয়নি। তবে তৃণমূলের নেতৃত্বের মধ্যে হুমায়ুনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকাই ধারণা করা হচ্ছে।