Gayatri Chakravorty Spivak: গায়ত্রী স্পিভাককে ‘হলবার্গ পুরস্কার’, মানববিদ্যায় বিশ্বমঞ্চে ভারতের গৌরব

বিশ্বের তত্ত্ব ও দর্শনের জগতে ভারতীয় মেধার অন্যতম গর্বিত প্রতিনিধি, বাঙালি পণ্ডিত অধ্যাপিকা গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক (Gayatri Chakravorty Spivak) চলতি বছর পেলেন নরওয়ের হলবার্গ পুরস্কার,…

Indian Scholar Gayatri Chakravorty Spivak Awarded the 2025 Holberg Prize

short-samachar

বিশ্বের তত্ত্ব ও দর্শনের জগতে ভারতীয় মেধার অন্যতম গর্বিত প্রতিনিধি, বাঙালি পণ্ডিত অধ্যাপিকা গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক (Gayatri Chakravorty Spivak) চলতি বছর পেলেন নরওয়ের হলবার্গ পুরস্কার, যা আর্টস ও হিউম্যানিটিজের ‘নোবেল’ হিসেবে পরিচিত। এটি তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের অসংখ্য স্বীকৃতি ও সম্মানের মুকুটে যোগ করা এক নতুন পালক। ভারতীয় মেধা, বিশেষত বাংলা শিক্ষার ক্ষেত্রে এটি একটি বিরাট গর্বের বিষয়।

   

গায়ত্রী স্পিভাকের (Gayatri Chakravorty Spivak)  এই পুরস্কার পাওয়া মূলত তাঁর মানববিদ্যা, তত্ত্বীয় সাহিত্য, নারীবাদী দৃষ্টিকোণ, এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক তত্ত্ব নিয়ে অঙ্গীকারপূর্ণ গবেষণার জন্য। ১৩ই মার্চ তাঁর নাম ঘোষণার পর, এই সম্মানটি শীঘ্রই নরওয়ের বেরজেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে যুবরাজ হাকোন তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন। এই পুরস্কারের অর্থমূল্য ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা, যা এক বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং পুরস্কারের গুরুত্বের প্রমাণ।

গত ২০১৭ সালে, গায়ত্রী স্পিভাক কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করেছিলেন, যেখানে তিনি হিউম্যানিটিজ বা মানববিদ্যার গুরুত্ব নিয়ে এক জোরালো বক্তব্য দেন। তাঁর মতে, “উচ্চশিক্ষায় হিউম্যানিটিজকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মানববিদ্যা না থাকলে দেশের ভবিষ্যতও অন্ধকারে ডুবে যাবে।” এই চিন্তা এবং চর্চা বিশ্বের শিক্ষাবিজ্ঞানে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসেছে এবং তাঁর এই চিন্তা-ভাবনা এখন পুরস্কৃত হয়েছে।

গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের মনোনয়নটি হলবার্গ পুরস্কারের কমিটি একটি বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, যেখানে তাঁকে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তুলনামূলক সাহিত্য, নিম্নবর্গের ইতিহাস, নারীবাদ, এবং সমাজ-রাজনৈতিক তত্ত্বের উপর তাঁর গবেষণা ও অধ্যাপনার জন্য এ পুরস্কারে মনোনীত করা হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান হাইকি ক্রিগার বলেছেন, “স্পিভাক পাশ্চাত্য চিন্তার মূল ভাবনাকে গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর সমালোচনায় রয়েছে ক্রমাগত প্রশ্ন করার অভ্যাস, যা আধুনিক বিশ্বের ভাবনার মূল কেন্দ্র ও প্রান্তসীমাকে স্পর্শ করেছে।”

গায়ত্রী স্পিভাকের এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আর এক বড় সম্মান পেয়ে আমাদের গর্বিত করলেন তিনি। অধ্যাপক স্পিভাক সাহিত্য তত্ত্ব এবং দর্শনে তাঁর অবদানের জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত। তবে পশ্চিমবঙ্গের কিছু প্রত্যন্ত গ্রামে দরিদ্র মানুষের জন্য তাঁর স্বেচ্ছাসেবা আমাকে মুগ্ধ করেছে।”

গায়ত্রী স্পিভাক বাংলা সাহিত্যের সেরা ধ্রুপদী রচনাগুলির ইংরেজি অনুবাদ করে বাংলা সাহিত্যের আন্তর্জাতিক স্তরে প্রভাব বিস্তার করেছেন। তাঁর এই প্রচেষ্টা দেশের সাহিত্যকে একটি নতুন জায়গায় নিয়ে গেছে। তার এই অর্জন শুধুমাত্র তাঁর নিজেরই নয়, বরং পুরো বাংলার জন্য একটি বিশাল সম্মান।