Mamata Banerjee: মমতার ফুরফুরা সফরে নওসাদ সিদ্দিকী, রাজনৈতিক মহলে নয়া জল্পনা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফুরফুরা শরিফে আয়োজিত কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত হন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। কিছুদিন আগে নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেন নওসাদ, আর এখন তাঁর…

Mamata Banerjee Invites ISF Leader Nawsad Siddique to Attend Her Meeting at Furfura Sharif"

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফুরফুরা শরিফে আয়োজিত কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত হন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। কিছুদিন আগে নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেন নওসাদ, আর এখন তাঁর উপস্থিতি আবারও রাজনৈতিক মহলে নতুন জল্পনা তৈরি করেছে। ত্বহা সিদ্দিকী, যিনি ফুরফুরার পিরজাদা, তিনি দাবি করেছেন, “আইএসএফ এবং তৃণমূলের মধ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সমঝোতা হতে চলেছে।” যদিও তৃণমূল বা আইএসএফ কেউই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

short-samachar

   

ত্বহা সিদ্দিকী আরও বলেছেন, “শুনছি, নওসাদ সিদ্দিকী তৃণমূলে যোগ দেবেন! তবে আমি মনে করি, তা হলে তৃণমূলের ক্ষতি হবে। নওসাদ সিদ্দিকী তৃণমূলে যোগ দেবেন না, বরং তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতা হবে।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি উসকে দিয়েছেন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, যেখানে নওসাদ সিদ্দিকীকে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, নওসাদ সিদ্দিকী নিজে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন। তিনি বলেছেন, “ভাঙড়ে তৃণমূলের লোকেরা আমার দলের কর্মীদের মারধর করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। মানুষের ভরসা ও মর্যাদা কোনওভাবেই ক্ষুণ্ণ হতে দেব না। তৃণমূলের কর্মসূচি ও কর্মপন্থার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।” তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আগেও ফুরফুরায় এসেছেন, তবে এবারের আমন্ত্রণে সব পিরজাদাদের উপস্থিতি কিছুটা আলাদা। হয়তো এবার মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কথা শুনবেন।”

ফুরফুরার স্থানীয় বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী, যিনি পরিবহনমন্ত্রীও, বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী একটি পবিত্র দিনে ফুরফুরায় আসছেন। সব পিরজাদাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক যোগ নেই।” তিনি আরও বলেন, “পিরজাদাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করবেন এবং তাঁদের দাবিগুলোর বিষয়ে আলোচনা করবেন।”

এদিকে, ফুরফুরা শরিফের উন্নয়নের জন্য পিরজাদাদের পক্ষ থেকে কিছু দাবি উঠেছে। প্রশাসনের খবর অনুযায়ী, ধনপোতায় ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী পিরজাদাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য এবং পুলিশকর্তারা ইতিমধ্যে বৈঠক করেছেন। এছাড়া, ত্বহা সিদ্দিকী দিঘায় মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য মসজিদ নির্মাণের দাবি তুলেছেন, পাশাপাশি ফুরফুরার সরকারি হাসপাতাল একশো শয্যায় উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন।

এছাড়া, ত্বহা সিদ্দিকী প্রস্তাব করেছেন যে ফুরফুরা অঞ্চলের আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং হাসপাতাল প্রয়াত পির আবু বক্কর সিদ্দিকীর নামে হওয়া উচিত। তাঁর মৃত্যু দিবস ১৭ মার্চকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করারও দাবি উঠেছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পিরজাদারা তাদের দাবির কথা জানাবেন বলে সূত্র জানাচ্ছে।

এদিন সন্ধ্যায়, পিরজাদা মেহরাব সিদ্দিকী, যিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, তাঁর বাড়িতে পিরজাদাদের একাংশ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। মেহরাব বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে ইফতার করবেন এবং আমাদের কিছু দাবিও রয়েছে। তবে এখন দাবী জানানোর সঠিক সময় নয়, সঠিক সময় এলেই আমরা আমাদের দাবী জানাব।”

এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং দাবির মধ্যে ফুরফুরার উন্নয়ন এবং পিরজাদাদের স্বার্থ রক্ষা নিয়ে একটি নতুন দিকের আলোচনা শুরু হয়েছে।