Aizawl FC vs Delhi FC: রেলিগেশন লড়াইয়ে দিল্লির বিরুদ্ধে ২-০ আইজলের গুরুত্বপূর্ণ জয়

আই-লিগে রেলিগেশন থেকে বাঁচার লড়াইয়ে আইজল এফসি (Aizawl FC) রবিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। উইঙ্গার লালবিয়াকডিকার দুটি গোলের সৌজন্যে তারা প্রতিদ্বন্দ্বী দিল্লি এফসি’কে ২-০…

Aizawl FC Delhi FC

short-samachar

আই-লিগে রেলিগেশন থেকে বাঁচার লড়াইয়ে আইজল এফসি (Aizawl FC) রবিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। উইঙ্গার লালবিয়াকডিকার দুটি গোলের সৌজন্যে তারা প্রতিদ্বন্দ্বী দিল্লি এফসি’কে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে। এই জয়ের ফলে আইজল এফসি প্রথমবারের মতো পয়েন্ট তালিকায় নীচের দুটি দলের উপরে উঠে এসেছে।

   

ম্যাচের ৪০তম এবং ৭৭তম মিনিটে গোল করে লালবিয়াকডিকা তার দলকে তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এনে দিয়েছেন। এই জয়ের পর আইজল এফসি ১৯টি ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে রেলিগেশন জোন থেকে সাময়িকভাবে বেরিয়ে এসেছে। তবে, তারা এসসি বেঙ্গালুরুর তুলনায় একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে, যারা এখনও তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারে।

মাহিলপুরে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে আইজল এফসি শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার চেষ্টা করে। প্রথমার্ধে দুই দলই গোলের সুযোগ তৈরি করলেও, ৪০তম মিনিটে লালবিয়াকডিকা দিল্লি এফসি’র রক্ষণভাগের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রথম গোলটি করেন। এই গোলের পর আইজলের খেলোয়াড়রা আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে এবং দ্বিতীয়ার্ধে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখে।

দ্বিতীয়ার্ধে দিল্লি এফসি সমতা ফেরানোর জন্য চেষ্টা চালালেও, আইজলের রক্ষণভাগ এবং গোলরক্ষক তাদের প্রতিটি আক্রমণ প্রতিহত করে। ৭৭তম মিনিটে লালবিয়াকডিকা দ্বিতীয় গোলটি করে ম্যাচের ফলাফল নিশ্চিত করেন। তার এই দুটি গোল শুধু জয়ই এনে দেয়নি, বরং দলের মনোবলও বাড়িয়েছে।

রেলিগেশন লড়াইয়ে নতুন আশা
এই মরসুমে আইজল এফসি’র পথচলা সহজ ছিল না। দলটি বেশিরভাগ সময় পয়েন্ট তালিকার নীচের দিকে ছিল এবং রেলিগেশনের ভয়ে পড়েছিল। কিন্তু এই জয় তাদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। ১৯ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন রেলিগেশন জোনের বাইরে উঠে এসেছে। তবে, এসসি বেঙ্গালুরু এখনও একটি ম্যাচ কম খেলেছে, ফলে আইজলের এই অবস্থান স্থায়ী হবে কিনা, তা নির্ভর করছে অন্য দলগুলির ফলাফলের উপর।

দিল্লি এফসি’র জন্য এই হার বড় ধাক্কা। তারা এই ম্যাচে পয়েন্ট অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান উন্নত করতে চেয়েছিল, কিন্তু হারের ফলে তারা রেলিগেশন জোনে আরও গভীরে ডুবে গেছে। দলটির খেলোয়াড়রা মাঠে সুযোগ তৈরি করলেও, তা গোলে রূপান্তর করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা তাদের দুর্বলতাকে প্রকাশ করেছে।

লালবিয়াকডিকার অবদান
এই ম্যাচের নায়ক নিঃসন্দেহে লালবিয়াকডিকা। তার দুটি গোল শুধু আইজলকে জয় এনে দেয়নি, বরং তাকে দলের একজন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রথম গোলটি ছিল তার দ্রুততা এবং দক্ষতার প্রমাণ, আর দ্বিতীয় গোলটি তার শান্ত মাথার পরিচয় দিয়েছে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “আমরা জানতাম এই ম্যাচ আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি শুধু আমার কাজ করার চেষ্টা করেছি, আর দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে খুশি।”

আই-লিগে আইজলের সম্ভাবনা
আইজল এফসি’র এই জয় তাদের সমর্থকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। দলটি এর আগে ২০১৬-১৭ মরসুমে আই-লিগের শিরোপা জিতেছিল, যা ভারতীয় ফুটবলে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কিন্তু তারপর থেকে তারা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি। এই জয়ের মাধ্যমে তারা আবারও নিজেদের শক্তি দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে, মরসুমের বাকি ম্যাচগুলিতে তাদের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।

অন্যদিকে, দিল্লি এফসি’র জন্য এখন প্রতিটি ম্যাচ জয়ের লক্ষ্যে খেলতে হবে। তাদের দুর্বল পারফরম্যান্স এবং গোল করার অক্ষমতা দলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী ম্যাচে তারা যদি ফিরে আসতে না পারে, তবে রেলিগেশন এড়ানো তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

এই জয়ের পর আইজল এফসি’র সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অনেকে লালবিয়াকডিকাকে “ম্যাচ সেভিয়ার” হিসেবে অভিহিত করেছেন। একজন সমর্থক লিখেছেন, “এই জয় আমাদের আশা জাগিয়েছে। আমরা চাই দল এভাবেই এগিয়ে যাক।” তবে, কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, আইজলের এই অবস্থান স্থায়ী করতে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

আইজল এফসি’র এই ২-০ জয় শুধু তিনটি পয়েন্টের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। এটি দলের জন্য একটি নতুন শুরুর ইঙ্গিত। লালবিয়াকডিকার নৈপুণ্য এবং দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা তাদের রেলিগেশনের ভয় থেকে সাময়িকভাবে মুক্তি দিয়েছে। তবে, আই-লিগের এই লড়াই এখনও শেষ হয়নি। আগামী ম্যাচগুলিতে আইজল এবং দিল্লি দুই দলই তাদের ভাগ্য বদলের জন্য মরিয়া হয়ে লড়বে। ফুটবল প্রেমীরা এখন অপেক্ষায় আছে, এই জয় কীভাবে আইজলের মরসুমকে প্রভাবিত করে।