Busts S*x Racket: আভিজাত হোটেলে দেহব্যবসার র‍্যাকেট ভাঙল পুলিশ, উদ্ধার চার অভিনেত্রী

মুম্বইয়ের পবই এলাকার একটি হোটেলে শুক্রবার একটি দেহব্যবসার (S*x Racket) র‍্যাকেট উৎখাত করেছে মুম্বই পুলিশ। এই অভিযানে চারজন স্ট্রাগলার অভিনেত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং একজন…

racket in hotel

short-samachar

মুম্বইয়ের পবই এলাকার একটি হোটেলে শুক্রবার একটি দেহব্যবসার (S*x Racket) র‍্যাকেট উৎখাত করেছে মুম্বই পুলিশ। এই অভিযানে চারজন স্ট্রাগলার অভিনেত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম শ্যাম সুন্দর আরোরা, যিনি এই অবৈধ ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। পবই পুলিশের এই অভিযান গোপন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে।

   

পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে হোটেলে ফাঁদ পেতেছিলাম। এরপর শ্যাম সুন্দর আরোরা নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি মহিলাদের দেহব্যবসায় জড়ানোর জন্য দায়ী ছিলেন। এই অভিযানে চারজন স্ট্রাগলার অভিনেত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।” উদ্ধারকৃত এই অভিনেত্রীরা মুম্বইয়ের বিনোদন জগতে নিজেদের পায়ে দাঁড় করানোর চেষ্টায় ছিলেন, কিন্তু তারা এই অবৈধ ব্যবসার শিকার হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন তথ্য পাওয়ার পর পবই থানার পুলিশ একটি বিশেষ দল গঠন করে। তারা হোটেলে একটি ছদ্ম গ্রাহক পাঠিয়ে ফাঁদ তৈরি করে। এই কৌশলের মাধ্যমে তারা শ্যাম সুন্দর আরোরাকে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয়। অভিযানের সময় হোটেলের কক্ষ থেকে আটটি মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আরোরা এই র‍্যাকেটটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করে আসছিলেন এবং তার সঙ্গে আরও একজন সহযোগী জড়িত থাকতে পারে, যিনি চারকোপ এলাকার বাসিন্দা। এই সহযোগীর খোঁজে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।

উদ্ধার হওয়া চারজন অভিনেত্রীর বয়স ২৬ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে একজন হিন্দি টেলিভিশন ধারাবাহিকে কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। এই অভিনেত্রীদের সংশ্লিষ্ট মডেলিং এবং অভিনয়ের কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে এই ব্যবসায় টেনে আনা হয়েছিল। পুলিশ তাদের একটি মহিলা আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠিয়েছে, যেখানে তাদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

শ্যাম সুন্দর আরোরার বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিক সংহিতা (বিএনএস) এবং অসৎ উদ্দেশ্যে মানব পাচার (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে শনিবার স্থানীয় আদালতে হাজির করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তদন্তে এই র‍্যাকেটের পিছনে আরও কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

মুম্বই, যিনি ভারতের বিনোদন শিল্পের রাজধানী হিসেবে পরিচিত, সেখানে স্বপ্ন পূরণের আশায় প্রতিদিন হাজার হাজার তরুণ-তরুণী আসেন। কিন্তু অনেকেই প্রতারণা ও শোষণের শিকার হন। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, স্ট্রাগলার শিল্পীদের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে অবৈধ কার্যকলাপে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে মুম্বই পুলিশ একাধিকবার এমন র‍্যাকেট ভেঙেছে, যেখানে মডেল, অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পীদের শিকার করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে পুলিশের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ বিনোদন জগতের এই অন্ধকার দিক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন নেটিজেন লিখেছেন, “এটা ভয়ঙ্কর যে স্বপ্ন পূরণের জন্য আসা মেয়েদের এভাবে শোষণ করা হয়। পুলিশের আরও কঠোর ব্যবস্থা দরকার।” আরেকজন লিখেছেন, “এই ধরনের অপরাধীদের কঠিন শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়।”

মুম্বই পুলিশের এই অভিযান শহরের অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তাদের সতর্কতা ও তৎপরতার প্রমাণ। চারজন স্ট্রাগলার অভিনেত্রীর উদ্ধার তাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনা এনে দিতে পারে। তবে এই ঘটনা সমাজের সামনে একটি বড় প্রশ্ন তুলেছে—কীভাবে এমন র‍্যাকেট থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করা যায়? পুলিশের তদন্ত এখনও চলছে, এবং আশা করা যায়, এই র‍্যাকেটের পিছনে থাকা অন্যান্য দোষীদেরও শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে।