ভারতের স্পিন বোলিং সেনসেশন বরুণ চক্রবর্তী (Varun Chakravarthy) তার জীবনের এক কঠিন সময়ের কথা স্মরণ করেছেন। ২০২১ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) ভারতের ব্যর্থতা এবং নিজের খারাপ পারফরম্যান্সের পর বরুণ চক্রবর্তী ফোনে হুমকি পেয়েছিলেন। তাকে বলা হয়েছিল ভারতে ফিরে আসতে হবে না এবং টুর্নামেন্টের পর তাকে চেন্নাইয়ের বাড়ি পর্যন্ত অনুসরণ করা হয়েছিল।
শুক্রবার বরুণ এক জনপ্রিয় ইউটিউব শোতে বলেন, “এটা আমার জন্য এক অন্ধকার সময় ছিল। আমি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম, কারণ আমি যখন বিশ্বকাপের দলে নির্বাচিত হয়েছিলাম, তখন অনেক আশা ছিল। কিন্তু আমি কোনো উইকেট নিতে পারিনি, এটা আমার কাছে খুবই কষ্টদায়ক ছিল।” তিনি আরও জানান, “তিন বছর পর আমাকে আবার জাতীয় দলে ডাক পড়েছিল, সুতরাং সেটা ছিল আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন সময়।”
বরুণ চক্রবর্তী জানান, “২০২১ সালের বিশ্বকাপের পর আমি হুমকি পেয়েছিলাম। আমাকে বলা হয়েছিল, ‘ভারতে ফিরে আসো না। যদি ফিরে আসো, তাহলে আর ফিরে যেতে পারবে না।’ এমনকি আমার বাড়ির দিকে কেউ চলে এসেছিল এবং আমাকে অনুসরণ করেছিল। বিমানবন্দর থেকে ফেরার সময় বাইকে কয়েকজন আমাকে অনুসরণ করেছিল। কিন্তু আমি বুঝতে পারি, ভক্তরা আবেগপ্রবণ হয়ে এমন কিছু করেন।”
বরুণ আরও বলেন, “এমন পরিস্থিতি আমি উপলব্ধি করতে পারি, কিন্তু যখন আমি আজকে ফিরে তাকাই, এখন যে প্রশংসা পাচ্ছি, তাতে আমি খুবই খুশি।”
বরুণ চক্রবর্তী বলছেন, “বিশ্বকাপের পর তিন বছর আমি দলে ছিলাম না, এই সময়টায় আমি নিজের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এনেছি। আমার দৈনন্দিন রুটিন, প্র্যাকটিস, সব কিছুই বদলে দিয়েছি। আগে আমি ৫০ বল প্র্যাকটিস করতাম, এখন আমি দ্বিগুণ বল প্র্যাকটিস করি। তখন আমি জানতাম না, নির্বাচকরা আমাকে আবার ডাকবে কি না। কিন্তু শেষে আমি আইপিএল জিতলাম এবং তার পরেই জাতীয় দলে ফেরার সুযোগ পেলাম।”
🚨Disgusting🚨
Varun Chakaravarthy says “After the 2021 World Cup, I received threat calls. ‘Don’t come to India. If you try, you won’t be able to.’ People came up to my house, tracked me down—I had to hide at times.”pic.twitter.com/OvgKvh04ZD
— ICT Fan (@Delphy06) March 14, 2025
এছাড়া বরুণ ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসেন এবং তিনি বেশ ভালো ফর্মে ছিলেন। তিনি ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলে জায়গা পেয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। তিনি দুবাইয়ে তিনটি ম্যাচে ৯টি উইকেট নিয়েছিলেন, যার মধ্যে ছিল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি পাঁচ উইকেটের দাপুটে পারফরম্যান্স।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনালে বরুণ চক্রবর্তী অস্ট্রেলিয়ার ট্র্যাভিস হেডকে আউট করে ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি দুটি উইকেট নেন এবং ভারত শিরোপা জয় করে। বরুণ তার অভিজ্ঞতা ভাগ করে বলেছেন, “চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আমার জন্য বিশাল আত্মবিশ্বাসের উৎস ছিল। আমি প্রথম চারটি ম্যাচে খেলেছিলাম এবং সফল হলে আমি অনুভব করেছিলাম যে আমি এখানে স্থান পাওয়ার যোগ্য।”
ভারতের এক দিনের আন্তর্জাতিক দলে বরুণের অভিষেক হয় জানুয়ারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে। এরপর তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ডাক পাওয়া ছিল এক দারুণ অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, “মুম্বইয়ে টি-২০ সিরিজের পর আমি চেন্নাই ফেরার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু সকালে আমাকে জানানো হলো যে আমি ওয়ানডে দলে আছি এবং আমাকে নাগপুর যেতে হবে। এটা ছিল একেবারে অপ্রত্যাশিত।”
বরুণের এমন দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন তার নিজের জন্য একটি নতুন শুরুর প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সাফল্যের পেছনে তার কঠোর পরিশ্রম এবং মানসিক দৃঢ়তা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।