গুজরাটের (Gujarat) ভরুচ জেলার অঙ্কলেশ্বর এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পাঁচটিরও বেশি স্ক্র্যাপ গুদাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত ছবিতে দেখা গেছে, কালো ধোঁয়ার ঘন কুণ্ডলী এবং আগুনের বিশাল শিখা আকাশের দিকে উঠছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ১০টিরও বেশি ফায়ার টেন্ডার মোতায়েন করা হয়েছে।
এই অগ্নিকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অঙ্কলেশ্বর শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত, এবং এখানে বহু স্ক্র্যাপ গুদাম রয়েছে, যেখানে পুরনো ধাতু, প্লাস্টিক এবং অন্যান্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ সংরক্ষণ করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই আগুন লাগার ঘটনায় গুদামগুলোতে থাকা জ্বালানিযোগ্য পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুনের শিখা এতটাই তীব্র ছিল যে তা দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর জন্য তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করেন। তবে, আগুনের বিশালতা এবং ধোঁয়ার কারণে তাদের কাজে বেশ কিছুটা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একাধিক ফায়ার টেন্ডার ক্রমাগত পানি ছিটিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, এখনও পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। স্ক্র্যাপ গুদামে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে জ্বালানিযোগ্য পদার্থ থাকে, যা আগুনের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, এই গুদামগুলোতে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল ছিল, যা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা কোনো দাহ্য পদার্থের অসতর্ক ব্যবহার এই ঘটনার জন্য দায়ী হতে পারে। পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়াও, এলাকার বাতাসে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ায় পরিবেশ দূষণের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অঙ্কলেশ্বর এলাকার এই অগ্নিকাণ্ড শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। স্ক্র্যাপ গুদামে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং নিয়মিত পরিদর্শনের অভাব এই ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা প্রদান এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।
এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে, ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত এই আগুন নিভিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে।