পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ, ২০২৫) বেলুচিস্তানে গিয়ে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন হামলায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী এবং উদ্ধারকারী কমান্ডোদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এই অভিযানে ৩০০-র বেশি যাত্রীকে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের হাত থেকে রক্ষা করা হয়। এই সফরটি মঙ্গলবার বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA) কর্তৃক ট্রেন ছিনতাইয়ের পর বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর ৩৩ জন জঙ্গিকে নিহত করার পরিপ্রেক্ষিতে হয়েছে। শরিফের সঙ্গে ছিলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ ইশাক দার, তথ্যমন্ত্রী আত্তাউল্লাহ তারার, পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী নওয়াবজাদা মির খালিদ মাগসি।
কীভাবে ঘটল হামলা?
মঙ্গলবার বিএলএ জঙ্গিরা রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জাফর এক্সপ্রেসের নয়টি কোচ ও ইঞ্জিনকে গুদালার ও পিরু কুনরির কাছে একটি পাহাড়ি সুড়ঙ্গে আটকে দেয়। তাঁরা ট্রেনের জানালায় গুলি চালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে, যাত্রীদের হত্যা বা আহত করে এবং অনেককে জিম্মি করে। সামরিক বাহিনী দুই দিনের অভিযান চালায়, যা বুধবার শেষ হয়। এতে সব ৩৩ জঙ্গিকে নিহত করা হয় এবং আর কোনো যাত্রীর প্রাণহানি হয়নি।
সামরিক কর্মকর্তারা জানান, জঙ্গিরা আফগানিস্তানে তাঁদের নেতাদের সঙ্গে স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগে ছিল। পাকিস্তান সেনা আফগান তালিবান সরকারকে সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করতে বলেছে, যদিও কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
উদ্ধার অভিযান ও পরিস্থিতি:
অভিযানে পাকিস্তান বিমান বাহিনী, স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ, সেনাবাহিনী ও ফ্রন্টিয়ার কর্পস অংশ নেয়। সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমদ শরিফ চৌধুরী বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত হামলাকারীদের নিষ্ক্রিয় করে জিম্মিদের মুক্ত করেছে। এ ধরনের সন্ত্রাস সহ্য করা হবে না। এই ঘটনা নিয়ম বদলে দেবে।”
যাত্রী মুহাম্মদ নাভিদ বলেন, “তাঁরা আমাদের বাইরে আসতে বলে ক্ষতি করবে না বলেছিল, কিন্তু কয়েকজনকে বেছে গুলি করে।” খ্রিস্টান শ্রমিক বাবর মসিহ জানান, “মহিলাদের অনুনয়ে তাঁরা নারী ও বয়স্কদের ছেড়ে দেয়।” এই ঘটনা বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা উদ্বেগকে আরও তীব্র করেছে।