নবদ্বীপে দোল উৎসব (Holi 2025) উপলক্ষে আমিষ খাওয়া নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। নিরামিষ বা আমিষ খাদ্য গ্রহণ যে যার নিজের মত পছন্দ করেন। দোল উৎসব বা হোলির দিন অনেকেই আমিষ খেতে পছন্দ করেন। তবে সম্প্রতি নবদ্বীপে দোল উৎসব উপলক্ষে একটি নতুন বিতর্ক উত্থিত হয়েছে। নবদ্বীপ শহরের পৌরসভার পক্ষ থেকে ১৩ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত আমিষ খাবার বর্জন এবং মাছ-মাংস বিক্রি না করার আবেদন জানানো হয়েছে।
এই আবেদনটি দোল উৎসব উপলক্ষে গৌড় পূর্ণিমার (Holi 2025) আয়োজনের সঙ্গে সম্পর্কিত। নবদ্বীপ শহর শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মস্থান এবং এখানে ভক্তদের সমাগম নিয়মিত হয়ে থাকে। অধিকাংশ বাসিন্দাই বৈষ্ণব এবং নিরামিষ খাদ্যভ্যাস অনুসরণ করেন। তবে এই আবেদনও শহরের সমস্ত বাসিন্দার পছন্দের সঙ্গে মেলে না।
নবদ্বীপ শহরে দোল উৎসব বা গৌড় পূর্ণিমা একটি ঐতিহাসিক ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছর এই উৎসবের সময় দেশে-বিদেশে হাজার হাজার ভক্ত নবদ্বীপে সমবেত হন। উৎসবের একাংশ হিসেবে মঠ-মন্দিরে নাম সংকীর্তন, ভজন-কীর্তন এবং নানা অনুষ্ঠান হয়। এমন একটি পুণ্যভূমি হিসেবে নবদ্বীপের গুরুত্ব অনেক। তাই, পৌরসভার পক্ষ থেকে দোল পূর্ণিমার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই আবেদন করা হয়েছে।
তবে শহরের কিছু মানুষ এই আবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের বক্তব্য, এই আবেদন কোনও বাধ্যবাধকতা নয়, এটি শুধুমাত্র একটি প্রস্তাব। যারা চান না, তারা এটি মানতে বাধ্য নন। কিছু মানুষ মনে করছেন, এমন আবেদনের মাধ্যমে তাদের পছন্দের খাবারের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা বিশ্বাস করেন, খাবারের স্বাধীনতা তাদের মৌলিক অধিকার।
আরেকটি দিক হল, নবদ্বীপ শহরে মাছ-মাংস বিক্রি একেবারে নিষিদ্ধ নয়। স্থানীয় বাজারে মাছ, মাংস বিক্রি হয়, এবং অনেকেই তা কিনে খেয়ে থাকেন। কিন্তু উৎসবের সময় একে নির্দিষ্ট পরিসরে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি যেন কোনওভাবেই সবার পছন্দে হস্তক্ষেপ না করে, তাই পৌরসভার পক্ষ থেকে এটি একটি স্রেফ আবেদন হিসেবেই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, এটি কোনও কঠোর নিয়ম নয়।
এই বিতর্কটি মূলত শহরের ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শ এবং পছন্দের উপর নির্ভর করছে। কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন যে, এটি শহরের ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় গুরুত্বের প্রতি সম্মান জানাতে একটি ভালো পদক্ষেপ। আবার, অন্যরা মনে করেন, খাবারের স্বাধীনতা আর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা দুটি আলাদা বিষয়, এবং কোনও একে অন্যের সাথে জড়িত নয়।