বাজারে ছড়িয়ে জাল ওষুধ, সক্রিয় অসাধু চক্র! সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্যজুড়ে আতঙ্ক

হাওড়া: রাজ্যে জাল ওষুধ নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই হাওড়া থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার জাল উচ্চ রক্তচাপের (হাই ব্লাড প্রেসার) ওষুধ উদ্ধার হয়েছে৷…

short-samachar

হাওড়া: রাজ্যে জাল ওষুধ নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই হাওড়া থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার জাল উচ্চ রক্তচাপের (হাই ব্লাড প্রেসার) ওষুধ উদ্ধার হয়েছে৷ নতুন রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ওই জাল ওষুধটি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় বিশেষভাবে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে টেলমা নামক একটি রক্তচাপ কমানোর ওষুধের ব্যাচ নম্বর ০৫২৪০৩৬৭। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছে, এই ব্যাচের ওষুধগুলো বাজারে জাল হয়ে বিক্রি হয়েছে।

   

রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাওড়ার আমতা থেকে এক কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার জাল ওষুধের একটি বড় চালান উদ্ধার হয়েছিল। তবে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, শুধু ২০ লক্ষ টাকার ওষুধই বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হয়েছিল, বাকি বিপুল পরিমাণ ওষুধ ইতিমধ্যে বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে। আর, সেই মধ্যে অন্যতম বিপজ্জনক ওষুধ হচ্ছে টেলমা। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ওষুধগুলো এমন ভাবে বানানো হয়েছিল যে ধরার কোনও উপায় ছিল না। সেই কারণেই আসল-নকল সব ওষুধ সমান তালে বাজারে বিকোচ্ছিল।

এই পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোক্তাদের কিউআর কোড স্ক্যান করে এই বিশেষ ব্যাচের ওষুধ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে করে, সাধারণ মানুষ দ্রুত জাল ওষুধ শনাক্ত করতে পারবে এবং সেগুলি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে পারবে।

এদিকে, চিকিৎসক মহলও এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র জানান, “এটা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সামিল। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উচিত স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং যারা এই অপরাধ করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।” অন্যদিকে, চিকিৎসক শারদ্বত মুখোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন, “২০ কোটি টাকার জাল ওষুধের হদিস মিললে আমি অবাক হব না। জাল ওষুধ এখন রোগীদের শরীরে ঘুরছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।”

এ অবস্থায়, রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড এবং স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরও কড়া পদক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।