ভারতীয় নাগরিকদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন ও নবীকরণের নিয়মে এসেছে বড় পরিবর্তন। ভারতের গেজেট প্রকাশিত নথি অনুযায়ী, নতুন নিয়মগুলিকে “পাসপোর্ট (সংশোধন) বিধি, ২০২৫” বলা হবে। এই পরিবর্তনগুলি ভারতীয় নাগরিকদের পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ এবং সহজতর করবে।
বাধ্যতামূলক জন্ম সনদ-
২০২৩ সালের ১ অক্টোবর অথবা তার পরে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করার সময় শুধুমাত্র জন্ম সনদই জন্মতারিখ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। জন্ম সনদটি অবশ্যই স্থানীয় পৌরসভা, জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন দপ্তর অথবা ১৯৬৯ সালের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইনে অনুমোদিত কোনও কর্তৃপক্ষ থেকে ইস্যু করা হতে হবে।
আগে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তির জন্য প্রমাণ
যারা ২০২৩ সালের ১ অক্টোবরের আগে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের জন্য জন্ম তারিখ প্রমাণের জন্য
নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে:
সরকারি স্কুলের সার্টিফিকেট, বা স্কুল ছাড়পত্র, বা ম্যাট্রিকুলেশন সনদ
আয়কর বিভাগের প্যান (পেরম্যানেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর) কার্ড
পেনশন অর্ডার বা সরকারের কর্মচারীর সেবা রেকর্ডের অংশ
পাবলিক লাইফ ইনস্যুরেন্স পলিসি
আধার কার্ড অথবা ই-আধার
নির্বাচন কমিশনের ছবি সহ ভোটার আইডি (EPIC)
বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স
নতুন ঠিকানা সুরক্ষা ব্যবস্থা
পাসপোর্টের শেষ পৃষ্ঠায় আর ঠিকানা ছাপানো হবে না। এর পরিবর্তে ঠিকানাটি একটি বারকোডের মাধ্যমে পাসপোর্টে এম্বেড করা হবে, যা ইমিগ্রেশন অফিসাররা প্রয়োজন অনুসারে স্ক্যান করবেন। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা বৃদ্ধি পাবে।
ঠিকানার প্রমাণ
পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সময় যে সব ঠিকানার প্রমাণ প্রয়োজন তা হলো:
জল বিল, টেলিফোন বিল (পোস্টপেইড মোবাইল বা ল্যান্ডলাইন)
বিদ্যুৎ বিল, আধার কার্ড
ভাড়া চুক্তি, ইনকাম ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট অর্ডার
গ্যাস সংযোগের প্রমাণ, সরকারি কর্মস্থল সনদ
পাসপোর্টে বাবা-মায়ের নাম না দেওয়া
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পাসপোর্টের শেষ পৃষ্ঠায় আর বাবা-মায়ের নাম লেখা হবে না, যা ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষা এবং একক অভিভাবক বা বিচ্ছিন্ন পরিবারের সদস্যদের জন্য সহায়ক হবে।
পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে বৃদ্ধি
পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে (পিএসকে) সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। বর্তমানে ৪৪২টি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র রয়েছে, যা আগামী ৫ বছরে ৬০০টি পর্যন্ত পৌঁছাবে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং সাশ্রয়ী করে তোলা।
রঙ কোডেড পাসপোর্ট
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পাসপোর্টে রঙ কোডিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যাতে বিভিন্ন শ্রেণীর নাগরিকদের পাসপোর্ট সহজে চিহ্নিত করা যায়। কূটনীতিকদের জন্য রেড পাসপোর্ট, সরকারি কর্মচারীদের জন্য হোয়াইট পাসপোর্ট এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্য নীল পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
এই নতুন নিয়মগুলি ভারতের পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকে আরও সুরক্ষিত, দ্রুত এবং নাগরিকদের জন্য আরও অ্যাক্সেসযোগ্য করবে।