ফের বিতর্কের সৃষ্টি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে। তবে এবার “আজাদ কাশ্মীর” এবং “ফ্রি প্যালেস্তাইন” দেওয়াল লিখনের কারণে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেটের কাছে একটি বিল্ডিংয়ের দেওয়ালে এই স্লোগান দেখা গেছে, যা নিয়ে দ্রুত জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে । ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে এই দেওয়াল লিখন নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর সৃষ্টি হয়েছে, একে অপরকে নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগে দোষারোপ করা হচ্ছে।
কিছু দিন আগে যাদবপুরে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ওপর হামলা এবং কিছাত্র আহত হন। এর ফলস্বরূপ কলকাতায় বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বিক্ষোভে রূপ নেয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়াল লিখন আবারও চর্চায় উঠে এসেছে।
সূত্রের দাবি, এই স্লোগানগুলি হয়তো পুরোনো, তবে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আবার আলোচনায় এসেছে। কিছু ছাত্র সংগঠন দাবি করছে, এসব স্লোগান সাম্প্রতিক সময়ে লিখিত হয়েছে, কিন্তু কেউই দায় স্বীকার করেনি।
এদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসি) সভাপতি কিশলয় রায় অভিযোগ করেছেন যে, “এই দেওয়াল লিখন অনেক দিন ধরেই চলছে। কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। অতিবাম এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো এসব করছে। একই সংগঠনই শিক্ষামন্ত্রীকে মারার চেষ্টা করেছিল। ক্যাম্পাসে শুধু ৩ নম্বর গেটের কাছে নয়, আরও অনেক জায়গায় এসব লেখা রয়েছে।”
জাতীয়তাবাদী ছাত্র সংগঠন এনএসএফের নেতা সোমসূর্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ক্যাম্পাসে এই নৈরাজ্য বহুদিন ধরেই চলছে। বামপন্থী সংগঠনগুলির কার্যকলাপের কারণে যারা দেশপ্রেমিক, তাদের নানা ভাবে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। দেশবিরোধী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, কিন্তু কর্তৃপক্ষ কিছু করছে না।”
তবে এসএফআই নেতা এবং আহত ছাত্র অভিনব বসু এই ঘটনায় মন্তব্য করেছেন, “আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো মতবাদ সমর্থন করি না। কিন্তু ‘ফ্রি প্যালেস্তাইন’ নিয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা বিজেপি শাসিত ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের বিরোধিতা করছি।”
এই বিতর্কের মধ্যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এখনও কোনও স্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি, যার ফলে ছাত্র সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলির তরফ থেকে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জাতীয়তাবাদী বিতর্কগুলি একে অন্যকে আরো বিভক্ত করছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যতেও এক নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।