চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ (Champions Trophy 2025) শুরু থেকেই রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) অবসর (Retirement) নিয়ে হয়েছিল একাধিক ভবিষ্যদ্বাণী। তবে ট্রফি জয়ের পর রোহিত শর্মা অবসর নেওয়ার প্রসঙ্গে কোন ইঙ্গিতই দিলেন না। বরং তাঁর বক্তব্যে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে তিনি খেলা চালিয়ে যেতে চান, বিশেষ করে এক দিনের ক্রিকেটে। এমনকি ২০২৭ বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিলেন না ‘হিটম্যান’।
ফাইনাল ম্যাচে ভারতের দুর্দান্ত জয় উপলক্ষে সঞ্চালক ইয়ান বিশপ যখন রোহিত শর্মার কাছে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চান, তখন তিনি সোজাসুজি উত্তর দেন, “কোনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই। যেমন চলছে, তেমনই চলবে। আমি এই ফর্ম্যাটে অবসর নিচ্ছি না।” তাঁর এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, তিনি এখন এক দিনের ক্রিকেটে আরও কিছু সময় খেলা চালিয়ে যেতে চান।
রোহিত শর্মা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, “দারুণ লাগছে জিততে পেরে। গোটা প্রতিযোগিতা জুড়ে আমরা ভাল খেলেছি। ফাইনালেও জেতার অনুভূতিটা বাকিগুলোর থেকে আলাদা। যে ভাবে খেলেছি, সেটা বাড়তি তৃপ্তি দিচ্ছে।” তাঁর এই মন্তব্যে ফুটে উঠেছে দলের প্রতি ভালোবাসা এবং ম্যাচে ব্যাটিং দর্শন।
বিশেষত, খেলার স্টাইল নিয়ে আলোচনার সময় রোহিত জানান, তাঁর জন্য আগ্রাসী ক্রিকেট খেলা স্বাভাবিক নয়। কিন্তু তিনি এটাই চেয়েছিলেন। “অনেকেই জানেন, আমার স্বাভাবিক খেলা নয় এটা। কিন্তু এই ধাঁচেই খেলতে চেয়েছিলাম। যখন আপনি আলাদা কিছু করছেন, তখন দল এবং কোচেদের সমর্থন খুব দরকার হয়।” তিনি আরও যোগ করেন যে, রাহুল ভাই এবং গৌতম গম্ভীরের সমর্থন তাঁকে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে উৎসাহিত করেছে এবং ফলস্বরূপ তাঁর খেলা আরও সফল হয়েছে।
রোহিত শর্মা নিজের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হিসেবে পিচের অবস্থান এবং শট নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, “সবার আগে বুঝতে হবে পিচ কী রকম। সেই অনুযায়ী খেলতে হবে। প্রথম পাঁচ-ছয় ওভার কী ভাবে খেলব সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা ছিল। শট মারার ধরনের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। দলের ব্যাটিং গভীরতা আমাকে আরও স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ করে দেয়।” তাঁর এই মতামত থেকে স্পষ্ট যে, তিনি নিজের খেলার জন্য আত্মবিশ্বাসী এবং দলের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের উপর নির্ভর করতে চান।
এছাড়াও, রোহিত শর্মা দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার, কেএল রাহুল এবং বরুণ চক্রবর্তীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। রাহুলের কঠিন পরিস্থিতিতে ম্যাচ ফিনিশ করার দক্ষতার প্রশংসা করে রোহিত বলেন, “রাহুলের মানসিকতা নিয়ে কী আর বলব। চাপে পড়লে কখনও সেটা দেখাতে ভালবাসে না। তাই একাই ম্যাচটা শেষ করল। চাপের মুখে ঠিক যে শটটা খেলতে হবে সেটাই খেলে।” পাশাপাশি, বরুণ চক্রবর্তীর বোলিং দক্ষতার প্রশংসা করে রোহিত বলেন, “বরুণের মধ্যে আলাদা একটা ব্যাপার রয়েছে। এই ধরনের পিচে খেলতে গেলে ওর মতো বোলারদেরই দরকার। শুরুর দিকে খেলেনি। পরের দিকে খেলে অনেক উইকেট নিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে পাঁচ উইকেটের কথাই ধরুন।”
রোহিত শর্মা ম্যাচ শেষে দুবাইয়ের দর্শকদেরও ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি। তিনি বলেন, “যাঁরা মাঠে এসে আমাদের সমর্থন করেছেন তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এখানকার দর্শকদের জন্যই এটি ঘরের মাঠ হয়ে উঠেছিল।”