অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তিডিপি সভাপতি চন্দ্রবাবু নাইডু শনিবার ঘোষণা করেছেন যে, সমস্ত নারী কর্মীকে তাদের সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় ছুটি দেওয়া হবে, সে কোন সন্তানই হোক না কেন। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রসূতি ছুটি শুধুমাত্র দুই সন্তানের ক্ষেত্রে দেওয়া হত। তবে নতুন সিদ্ধান্তে এখন সব সন্তানের ক্ষেত্রে ছুটি দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিবার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা এবং মহিলাদের কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এই ঘোষণা তৃণমূল স্তরে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। তিডিপি নেতা ও ভিজিয়ানগরমের সাংসদ কালিসেতি আপ্পালা নাইডু গত শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আরও একটি নতুন ঘোষণা দেন। তিনি বলেছেন, তৃতীয় সন্তান জন্ম দিলে মহিলাদের জন্য ৫০,০০০ টাকা আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হবে। এছাড়া, তিনি বলেন, তৃতীয় সন্তান জন্ম দিলে মহিলাকে একটি গাভীও উপহার হিসেবে দেওয়া হবে, যদি সন্তানটি ছেলে হয়। এই প্রস্তাব সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে, এবং তিডিপি নেতা ও কর্মীরা এই ঘোষণা তাদের সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্টে পুনরায় পোস্ট করছেন। তিডিপি নেতারা বলছেন, এই প্রস্তাবটি মহিলাদের জন্য একটি বিপ্লবী উদ্যোগ হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে।
চন্দ্রবাবু নাইডু এই প্রস্তাবের জন্য সাংসদ অ্যাপ্পালা নাইডুর প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের উদ্যোগ রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে, চন্দ্রবাবু নাইডু গত মার্চ মাসে দিল্লি সফরকালে দক্ষিণ ভারতের জনসংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, দক্ষিণ ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ধীর গতিতে চলছে এবং এর ফলে ভবিষ্যতে আরও বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে। তিনি জানান, উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের মতো রাজ্যগুলির তুলনায় দক্ষিণ ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি এক সময় পরিবার পরিকল্পনার পক্ষাঘাত ছিলাম, তবে এখন আমি জনসংখ্যা বৃদ্ধির পক্ষে অবস্থান নিয়েছি। ভারত এখন বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যা সুবিধার দেশ। যদি আমরা এই জনসংখ্যা সুবিধাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারি, তবে ভারত এবং ভারতীয়রা বিশ্বের সামনে একটি বৃহত্তম শক্তি হতে পারবে।” তিনি বলেন, “আমরা একে একে জাতীয় জনসংখ্যা এবং রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রতি মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি, যাতে একদিকে মহিলাদের সমর্থন করা যায় এবং অন্যদিকে দেশের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।”
চন্দ্রবাবু নাইডু শনিবার মার্কাপুরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেছিলেন। তিনি তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “পূর্বে প্রসূতি ছুটি দুটি সন্তান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। এখন আমরা সব সন্তানের জন্য প্রসূতি ছুটি বাড়াচ্ছি। এই পদক্ষেপটি পরিবার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে, জনসংখ্যার ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং মহিলাদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। আমরা মহিলাদের ক্ষমতায়ন করতে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য শক্তিশালী ভবিষ্যত গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এই নতুন পদক্ষেপ এবং প্রস্তাবের মাধ্যমে চন্দ্রবাবু নাইডু অন্ধ্রপ্রদেশের জনগণের জন্য এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভবিষ্যতের আশার সূচনা করেছেন।