International Women’s Day: মনু থেকে অঞ্জু, খেল রত্নে সম্মানিত ভারতীয় মহিলা ক্রীড়াবিদদের তালিকা

প্রতি বছর ৮ মার্চ পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day) । বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নারীদের অবদান ও সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি বিশেষ…

indian-women-s-sportspersons-to-win-khel-ratna-award-from-manu-bhaker-to-anju-bobby-george

short-samachar

প্রতি বছর ৮ মার্চ পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day) । বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নারীদের অবদান ও সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি বিশেষ দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এই দিনটি শুধু একটি উত্সবের দিন নয়। এটি নারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম, সাহস, এবং সমাজের প্রতি তাঁদের অমূল্য অবদানকে উদযাপন করার এক বিশেষ মুহূর্ত। ক্রীড়া ক্ষেত্রেও নারীদের অবদান অতুলণীয়।

   

ভারতের সাম্প্রতিক বহু-ক্রীড়া ইভেন্টে পারফরম্যান্স তেমন উল্লেখযোগ্য না হলেও, বিশেষ করে অলিম্পিকে মহিলা ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। কর্ণম মল্লেশ্বরী এবং অঞ্জু ববি জর্জের মতো ব্যতিক্রমী প্রতিভার দিন আর নেই। যাঁরা তাদের সময়ে বিরল উদাহরণ ছিলেন। কিন্তু অবকাঠামোর উন্নতি, সুবিধার প্রসার ফলে অসংখ্য মহিলা ক্রীড়াবিদ ভারতের হয়ে বিশ্ব মঞ্চে বিভিন্ন ক্রীড়ায় উজ্জ্বল পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন।

ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মান খেল রত্ন পুরস্কার (Khel Ratna Award), যা ১৯৯১-৯২ সালে শুরু হয়েছিল। ৩৩ বছরে ৬২ জন ক্রীড়াবিদকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২১ জন মহিলা, অর্থাৎ এক-তৃতীয়াংশ। মহিলাদের অংশগ্রহণ এবং পারফরম্যান্স উন্নত হয়েছে। তবে পুরুষ ক্রীড়াবিদরাও যে বিশ্বমানের ফলাফল দেখাচ্ছেন তা নয়। সাম্প্রতিক প্যারিস অলিম্পিকে বেশ কয়েকটি চতুর্থ স্থান ভারতের ভাগ্যে জুটে ছিল।

স্বর্ণপদক বিজয়ী নীরজ চোপড়া ছাড়া কোনও পুরুষ ক্রীড়াবিদ এই চার বছর অন্তর ইভেন্টে পদক নিশ্চিত করতে পারেননি। তাই মনু ভাকের, মণিকা বাত্রা, জ্যোতি ইয়ারাজি, বিনেশ ফোগাট, নিখাত জারিন এবং লভলিনা বরগোহাইনের মতো মহিলা ক্রীড়াবিদদের সাম্প্রতিক এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস এবং অলিম্পিকে পারফরম্যান্স ভবিষ্যতের পদকের আশা জিইয়ে রেখেছে।

১১টি ক্রীড়ায় ২১ জন মহিলা ক্রীড়াবিদ এখন পর্যন্ত মেজর ধ্যান চাঁদ খেল রত্ন পুরস্কার (Khel Ratna Award) পেয়েছেন। মিতালি রাজ (ক্রিকেট), রানি রামপাল (হকি) এবং মণিকা বাত্রা (টেবিল টেনিস) তাদের ক্রীড়ায় একমাত্র বিজয়ী, আর দীপা মালিক ২০১৯ সালে শট পাট, জ্যাভলিন থ্রো এবং ডিসকাস থ্রো-তে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে একমাত্র প্যারা-ক্রীড়াবিদ হিসেবে এই পুরস্কার জিতেছেন।

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day) উদযাপনের দিনে, খেল রত্ন পুরস্কার জয়ী ভারতীয় মহিলা ক্রীড়াবিদদের সম্পূর্ণ তালিকা দেওয়া হল:

  1. কর্ণম মল্লেশ্বরী (১৯৯৪/৯৫) – ওয়েটলিফটিং
  2. নমেইরাকপাম কুঞ্জারানি দেবী (১৯৯৫/৯৬) – ওয়েটলিফটিং
  3. জ্যোতির্ময়ী শিকদার (১৯৯৮/৯৯) – অ্যাথলেটিক্স (দৌড়)
  4. কে.এম. বীনামোল (২০০২) – অ্যাথলেটিক্স (দৌড়)
  5. অঞ্জলি ভাগবত (২০০২) – শুটিং
  6. অঞ্জু ববি জর্জ (২০০৩) – অ্যাথলেটিক্স (লং জাম্প)
  7. মেরি কম (২০০৯) – বক্সিং
  8. সায়না নেহওয়াল (২০১০) – ব্যাডমিন্টন
  9. সানিয়া মির্জা (২০১৫) – টেনিস
  10. পিভি সিন্ধু (২০১৬) – ব্যাডমিন্টন
  11. দীপা কর্মকার (২০১৬) – জিমন্যাস্টিক্স
  12. সাক্ষী মালিক (২০১৬) – কুস্তি
  13. সাইখোম মীরাবাই চানু (২০১৮) – ওয়েটলিফটিং
  14. দীপা মালিক (২০১৯) – প্যারা অ্যাথলেটিক্স (শট পাট/জ্যাভলিন থ্রো/ডিসকাস থ্রো)
  15. মণিকা বাত্রা (২০২০) – টেবিল টেনিস
  16. বিনেশ ফোগাট (২০২০) – কুস্তি
  17. রানি রামপাল (২০২০) – হকি
  18. লভলিনা বরগোহাইন (২০২১) – বক্সিং
  19. অবনি লেখরা (২০২১) – প্যারা শুটিং
  20. মিতালি রাজ (২০২১) – ক্রিকেট
  21. মনু ভাকের (২০২৪) – শুটিং
    মহিলা ক্রীড়াবিদদের এই উত্থান ভারতীয় ক্রীড়া জগতে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। আগে যেখানে পুরুষ ক্রীড়াবিদদের উপরই বেশি নির্ভর করা হতো। সেখানে এখন মহিলারা সমানতালে এগিয়ে আসছেন। মনু ভাকের প্যারিস অলিম্পিকে দুটি ব্রোঞ্জ জয়, বিনেশ ফোগাটের কুস্তিতে দাপট, নিখাত জারিনের বক্সিংয়ে উত্থান এবং লভলিনা বরগোহাইনের অলিম্পিক পদক ভারতের জন্য গর্বের বিষয়। এছাড়া, মণিকা বাত্রার টেবিল টেনিসে কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণ এবং জ্যোতি ইয়ারাজির অ্যাথলেটিক্সে সম্ভাবনা ভবিষ্যতের জন্য আশা জাগায়।

মহিলা ক্রীড়াবিদরা কেবল পদক জিতছেন না, সমাজে একটি নতুন বার্তাও দিচ্ছেন। পরিবারের সমর্থন এবং উন্নত প্রশিক্ষণ সুবিধা তাদের এই সাফল্যের পথে সাহায্য করেছে। যেমন, মীরাবাই চানু ওয়েটলিফটিংয়ে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছেন, আর পিভি সিন্ধু ব্যাডমিন্টনে দুটি অলিম্পিক পদক জিতে ইতিহাস গড়েছেন। সাক্ষী মালিক কুস্তিতে ভারতের প্রথম মহিলা অলিম্পিক পদক বিজয়ী, আর মেরি কম বক্সিংয়ে একটি যুগের প্রতীক।