Howrah fire: হাওড়ার কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫টি দমকল

হাওড়ার (Howrah) বাঁকড়ায় শুক্রবার গভীররাতে একটি কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।…

Fire Breaks Out at Howrah’s Bankra Cloth Market

short-samachar

হাওড়ার (Howrah) বাঁকড়ায় শুক্রবার গভীররাতে একটি কাপড়ের বাজারে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পাঁচটি দমকল ইঞ্জিনের সাহায্যে আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

   

হাওড়ার বাঁকড়া এলাকায় অবস্থিত এই কাপড়ের বাজারটি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। গতকাল রাত আটটা নাগাদ আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হঠাৎ করেই আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তা পুরো বাজারে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। স্থানীয়রা তৎক্ষণাৎ দমকল বাহিনীকে খবর দেন। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ধোঁয়ায় পুরো এলাকা ঢেকে যায়।

হাওড়ার ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার (ডিএফও) রঞ্জন কুমার জানিয়েছেন, “আমরা রাত আটটার সময় আগুন লাগার খবর পাই। তৎক্ষণাৎ আমাদের দমকল দল এবং পাঁচটি দমকল ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। কঠোর পরিশ্রমের ফলে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনও আহত বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।” তিনি আরও জানান, আগুন নেভানোর কাজ শেষ হয়েছে এবং এখন শীতলীকরণ প্রক্রিয়া চলছে যাতে আগুন পুনরায় না জ্বলে ওঠে।

আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে। বাঁকড়ার মতো পুরনো বাজারে তারের জটিলতা এবং অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রায়ই এ ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হয়ে থাকে। দমকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল শীঘ্রই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে।

এই ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজারের একজন দোকানদার, অজয় মণ্ডল বলেন, “আমরা হঠাৎ ধোঁয়া দেখতে পাই এবং তারপরই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আমার দোকানে প্রায় দুই লক্ষ টাকার মাল ছিল, সব শেষ হয়ে গেছে।” অনেক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তাদের জীবিকা এই বাজারের উপর নির্ভরশীল। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের সংখ্যা এখনও নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি, তবে প্রাথমিক অনুমানে ১৫-২০টি দোকান পুড়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রিনা দাস বলেন, “আগুন দেখে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। দমকলের লোকেরা না এলে এলাকায় আরও বড় ক্ষতি হতে পারত।” তিনি দ্রুত পদক্ষেপের জন্য দমকল বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

হাওড়ার জেলাশাসক এবং পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা এই ঘটনার তদন্ত করছি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে রাজ্য সরকার।” তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে বাজারগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

বাঁকড়ার এই অগ্নিকাণ্ড আবারও পুরনো বাজারগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দমকল বাহিনীর তৎপরতায় বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো গেলেও, ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতি অনেক। তদন্তের পর আগুনের কারণ স্পষ্ট হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এখন সবার চোখ সরকারের দিকে, ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে সাহায্য করা হয়, তা দেখার জন্য।