Birbhum: মমতার শিয়রে সিঙ্গুরের মেঘ,থমথমে দেউচা পাঁচামিতে আদিবাসীদের সভা

কয়লা খনির জন্য বরাদ্দ জমি না দিতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া বার্তা দিয়ে চলেছেন দেউচা পাঁচামির আদিবাসীরা। এলাকা থমথমে। আদিবাসীদের রোষ বাড়ছে। বীরভূম জেলা…

Deucha pachami

short-samachar

কয়লা খনির জন্য বরাদ্দ জমি না দিতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া বার্তা দিয়ে চলেছেন দেউচা পাঁচামির আদিবাসীরা। এলাকা থমথমে। আদিবাসীদের রোষ বাড়ছে। বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা এলাকায় মার খাবার আশঙ্কা করছেন। গত বামফ্রন্ট আমলে সিঙ্গুরে টাটা মোটরস কারখানা গড়ার সময় জমি আন্দোলনের নেত্রী ছিলেন মমতা। এবার তার সামনে দেউচা পাঁচামিতে বিক্ষোভের সিঙ্গুরে মেঘ!

   

বীরভূমের মহম্মদবাজার এলাকার দেউচা পাঁচামিতে অবৈজ্ঞানিকভাবে কয়লা খাদান করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এমনই অভিযোগ সিপিআইএমের শ্রমিক নেতা গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জির। তিনি পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিআইএম সম্পাদক তবে দনীয় তরফে পড়শি জেলা বীরভূমের দেউচা পা়ঁচামিতে কয়লা খাদান বিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংযোগ রেখেছেন। তিনি জানান, গ্রামবাসীরা সাগরবান্দি গ্রামে জমায়েত করেন। খাদানের কাজ বন্ধ।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে দেউচা পাঁচামির কয়লা খনন কাজ শুরু কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরের দিন এলাকায় বাধার মুখে পড়তে হয় প্রশাসনের অফিলারদের। গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিশাল পুলিশ বাহিনীর ঘেরাটোপে মাটি কাটার কাজ শুরু হয়। চারটি গ্রামের আদিবাসী মহিলারা কাজ বন্ধ করে দেন। দেউচা পাঁচামি থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে এমনই বার্তা খাদান সংলগ্ন গ্রামগুলোতে ছড়িয়েছে।

রাজ্য সরকারের তথ্যে বলা হয়েছে, এখানকার ৩৪০০ একর এলাকা জুড়ে কয়লা রয়েছে। ২০টি গ্রাম। প্রায় ২১ হাজার মানুষ বাস করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকায় বনাঞ্চল, জলাভূমি ও চর রয়েছে। রাজ্য সরকারের দাবি, মাটির নিচে ১২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত রয়েছে। এছাড়া ৬৭৫ মিলিয়ন টন ব্যাসল্ট শিলাস্তর রয়েছে। এই খনি বাস্তবে রূপ পেলে এশিয়ার সর্ববৃহৎ কয়লাখনি হবে দেউচা পাঁচামি।

সিপিআইএম নেতা গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি লিখেছেন, ২০১১ সানের জনগননা অনুসারে আমাদের দেশের মোট জনসমষ্টির ৮.২ শতাংশ আদিবাসী। দেশের মধ্যে শিল্পায়ন, খনি, বনাঞ্চল,বিভিন্ন জলাধার নির্মানের জন্য বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এই বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে আবার সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমাদের দেশের আদিবাসী সমাজ। একটা হিসাবে দেখা যাচ্ছে বাস্তুচ্যুত মানুষ গুলোর মধ্যে ৫৫.১৬ শতাংশ আদিবাসী জনসমষ্টি। এঁরাই মুলত সমাজের উন্নয়নের নামে আক্রমনের শিকার হচ্ছেন এবং বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন।

Deucha Pachami

সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, পুলিশ প্রশাসন ইতিমধ্যেই দেউচায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে যাতে সেখানকার খবর বাইরে না আসে এবং বাইরের খবর সেখানকার বাসিন্দারা না পেতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী নামিয়েছেন প্রতিবাদীদের দমন করতে। শিল্পক্ষেত্র নয়, উনি যুদ্ধক্ষেত্র বানাচ্ছেন দেউচায়। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি সত্যিই শিল্প করতে চান তাহলে নিজে দেউচায় গিয়ে সেই শিল্পের উদ্বোধন করলেন না কেন?

সেলিম বলেছেন, কোনও শিল্পায়ন নয়, মুখ্যমন্ত্রী দেউচা পাঁচামীতে আদিবাসীদের জঙ্গলের জমি দখল করে পাথর খাদানের জন্য দিতে চান বেআইনিভাবে। মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন, দেউচার মানুষের সঙ্গে সরকার কোনও আলোচনাই করেনি, সম্মতি আদায় তো পরের কথা, তাঁদের প্রকল্পের সম্পর্কে কিছু জানানোই হয়নি। কোনও পরিবেশগত প্রভাবের পরীক্ষা করে ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি, জোর করে আদিবাসীদের জমি থেকে উচ্ছেদ করে দখল করা হচ্ছে।