অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড (Agusta Westland ) চপার কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত, ইটালির ‘মিডলম্যান’ ক্রিশ্চিয়ান মিশেল, সিবিআইয়ের পর এবার ইডির মামলায়ও জামিন পেয়েছেন। এর ফলে, ২০১৮ সাল থেকে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দী মিশেলের জেলমুক্তির পথ এবার আরও প্রসস্ত হল।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, সিবিআই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট মিশেলকে জামিন দিলেও, ইডির মামলায় জামিন পেতে মঙ্গলবার দিল্লি হাই কোর্টের সামনে তাঁর আইনজীবী যুক্তি তুলে ধরেন। বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা ইডির মামলায় মিশেলকে জামিন দেওয়ার রায় দেন। মিশেল আদালতে দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে তদন্ত চলছে তাতে বিশেষ কোনো অগ্রগতি হয়নি এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে জেলে বন্দী আছেন। এই পরিস্থিতিতে, তাঁর মুক্তি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জামিনের সিদ্ধান্ত নেয়।
ক্রিশ্চিয়ান মিশেল ৩,৬০০ কোটি টাকার হেলিকপ্টার দুর্নীতি কেলেঙ্কারির অন্যতম মুখ্য অভিযুক্ত, যেখানে তার মাধ্যমে দুর্নীতি করা হয়েছিল। অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড, একটি ইটালিয়ান হেলিকপ্টার নির্মাণকারী সংস্থা, যে পাঁচটি ভিভিআইপি হেলিকপ্টার ভারতের জন্য সরবরাহ করেছিল, তার সঙ্গে জড়িত ছিলেন মিশেল। এই দুর্নীতির অভিযোগে তৎকালীন ইউপিএ সরকারের একাধিক নেতা, এমনকি ভারতীয় বায়ুসেনার প্রাক্তন প্রধান এসপি ত্যাগীর নামও উঠে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, এই চুক্তির মাধ্যমে ঘুষ নেওয়া হয়েছিল এবং মিশেল এই চুক্তি প্রভাবিত করেছিলেন।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে মিশেলকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার পর থেকেই এই দুর্নীতি মামলার তদন্ত শুরু হয়। সিবিআই ও ইডি যৌথভাবে এই মামলার তদন্ত করছে। মিশেলকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই একের পর এক কংগ্রেস নেতার নাম এই মামলায় জড়িয়েছে এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মিশেল যে ভূমিকায় ছিলেন, তাকে ‘মিডলম্যান’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, এবং এই মামলায় তার ভূমিকা তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মিশেলের জামিন পাওয়া শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত মুক্তির দিক থেকে নয়, বরং এটি পুরো মামলার উপরেও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। সিবিআই ও ইডির যৌথ তদন্তের মধ্য দিয়ে এই দুর্নীতির মূল স্তর উন্মোচনের চেষ্টা চলছে। মিশেলের জামিন পাওয়ার পরেও, তদন্তকারী সংস্থাগুলি তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে। তবে মিশেলের আইনজীবী আশা প্রকাশ করেছেন যে, তাঁর ক্লায়েন্ট নির্দোষ এবং মামলার তদন্ত ঠিকমতো না হওয়ার কারণে তাঁর জামিন পাওয়া স্বাভাবিক ছিল।
এখন প্রশ্ন উঠছে, মিশেল জামিন পাওয়ার পর এই মামলার তদন্তে কি নতুন কোনো মোড় আসবে? বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে এর প্রভাব কি পড়বে? বিশেষ করে কংগ্রেস দল এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে এই ঘটনার কী ফলস্বরূপ হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে, জামিন পেয়ে যাওয়ার পর মিশেলের মুক্তির সম্ভাবনা আরও জোরালো হলো, এবং তাঁর বিরুদ্ধে আসন্ন তদন্তে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।