RBI-কে লিকুইডিটি রক্ষায় ১ লাখ কোটি ইনজেক্টের ঘোষণা SBI’র

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI), আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তরলতা (liquidity) সমন্বিত রাখতে ১ লক্ষ কোটি টাকা ইনজেক্ট করতে হতে…

rbi-to-inject-1-lakh-crore-for-liquidity-maintenance-declaration-by-sbi

short-samachar

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI), আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তরলতা (liquidity) সমন্বিত রাখতে ১ লক্ষ কোটি টাকা ইনজেক্ট করতে হতে পারে বলে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI) রিসার্চের একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

   

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে সিস্টেমিক তরলতা সংকটজনক অবস্থায় রয়েছে, এবং ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে এটি ১.৬ লক্ষ কোটি টাকার ঘাটতির মধ্যে রয়েছে। গড় তরলতা ঘাটতি আরও বেশি, প্রায় ১.৯৫ লক্ষ কোটি টাকার। গত কয়েক মাস ধরে, ব্যাংকিং সিস্টেমে এটি অন্যতম বৃহত্তম তরলতা সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

SBI-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, “আমরা মনে করি, মার্চ মাসের মধ্যে আরও ১ লক্ষ কোটি টাকা ইনজেক্ট করা প্রয়োজন, যাতে সিস্টেমিক তরলতা সমন্বিত থাকে। দৈনিক FPI আউটফ্লো এবং ১/২/৩ মাসের মধ্যে ফরওয়ার্ড লেনদেনের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও, RBI-কে আরও তরলতা সরবরাহ করতে হবে।”

ব্যাংকিং সিস্টেমের তরলতা পরিস্থিতি গত কয়েক মাসে আরও খারাপ হয়ে গেছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে সিস্টেমে ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার তরলতা উদ্বৃত্ত ছিল, তবে ডিসেম্বরে তা ৬৫,০০০ কোটি টাকার ঘাটতিতে পরিণত হয়। জানুয়ারি ২০২৪ মাসে, এই ঘাটতি আরও বাড়িয়ে ২.০৭ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে পৌঁছায় এবং ফেব্রুয়ারিতে এটি ১.৫৯ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে আসে।

এটি অনেকগুলো কারণে সৃষ্টি হয়েছে, যেমন বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারী (FPI) থেকে উল্লেখযোগ্য আউটফ্লো এবং সামনের মাসগুলোর মধ্যে ফরওয়ার্ড লেনদেনের মেয়াদ শেষ হওয়া। এছাড়া, বছরের শেষে ট্যাক্স আউটফ্লো এবং ঋণের চাহিদা বাড়ানোর কারণে তরলতার পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠেছে।

তরলতা সংকট মোকাবিলার জন্য RBI বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভ্যারিয়েবল রেট রিপো (VRR) নিলাম, ওপেন মার্কেট অপারেশন (OMO), এবং ডলার-রুপি সোয়াপ অ্যারেঞ্জমেন্ট। জানুয়ারি ১৬ থেকে RBI দৈনিক VRR নিলাম পরিচালনা করছে, যাতে স্বল্পমেয়াদী তরলতা চাহিদা পূরণ করা যায়।

এখন পর্যন্ত, RBI ১.৩৮ লক্ষ কোটি টাকার ওপেন মার্কেট অপারেশন (OMO) পরিচালনা করেছে এবং এপ্রিল মাসের জন্য ত্রৈমাসিক VRR নিলামের পরিমাণ প্রায় ১.৮ লক্ষ কোটি টাকার হতে পারে। এছাড়া, RBI ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে, যাতে তরলতা পরিস্থিতি সমর্থিত থাকে।

তবে, এই পদক্ষেপ সত্ত্বেও তরলতা পরিস্থিতি এখনও সংকটমুক্ত নয়। SBI-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, RBI-র দৈনিক VRR ডেটা অনুযায়ী, বিডে প্রাপ্ত পরিমাণের ভিত্তিতে অ্যালোকেটেড পরিমাণ গড়ে ৮৩ শতাংশ হয়েছে। যদিও মার্চে দৈনিক তরলতা ঘাটতি কিছুটা কমেছে, তবে ঋণের চাহিদা এবং সরকারি খরচের কারণে পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক।

এ কারণে, SBI রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে যে, RBI-কে মার্চ মাসের শেষ নাগাদ আরও ১ লক্ষ কোটি টাকা ইনজেক্ট করতে হবে, যাতে ব্যাংকিং সিস্টেমের তরলতা সমন্বিত অবস্থায় আনা যায়। যদি তরলতা পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে ওঠে, তবে RBI-কে আরও পদক্ষেপ নিতে হতে পারে যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা স্থিতিশীল থাকে এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।

SBI রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, যদি তরলতা পরিস্থিতি সংকটজনক থাকে, তবে RBI-কে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিতে হতে পারে, যেমন দীর্ঘমেয়াদী নিলাম এবং অন্য মুদ্রা ব্যবস্থার মাধ্যমে তরলতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা। এটি দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সামগ্রিকভাবে, RBI-র তরলতা ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। সরকারের তরফ থেকে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী।