এপিক নম্বর নিয়ে বড় অভিযোগ, কমিশনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিতে তৃণমূলের হুঁশিয়ারি

ভোটার তালিকায় একই এপিক নম্বরে দুই রাজ্যে ভোটার কার্ড নিয়ে এক নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ…

TMC Warns Election Commission: Accept Mistakes or We Will Present New Documents

ভোটার তালিকায় একই এপিক নম্বরে দুই রাজ্যে ভোটার কার্ড নিয়ে এক নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করছে। তাদের অভিযোগ, বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে যোগসাজসের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় কারচুপি করা হয়েছে। এবার তৃণমূল নেতারা দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠক আয়োজন করে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, কীর্তি আজাদ এবং সাগরিকা ঘোষ এই ঘটনাকে “কেলেঙ্কারি” বলে অভিহিত করেছেন।

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন অভিযোগ করেছেন, ভোটের সময় ভিন রাজ্য থেকে ভোটার আনতেই এই একই এপিক নম্বরের ভোটার কার্ড তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশন এখনও ভুল স্বীকার করেনি। আমরা তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভুল স্বীকার করার সময় দিয়েছি। যদি তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভুল স্বীকার না করে, তাহলে আমরা নতুন তথ্য সামনে আনব।” ডেরেক দাবি করেছেন, ১০০ দিনের মধ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন করতে হবে। তার মতে, এমন ভুল বা কারচুপি দেশব্যাপী বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে।

kolkata24x7-sports-News

   

সাংবাদিক বৈঠকে সাগরিকা ঘোষ বলেন, “একই এপিক নম্বরে দুটি রাজ্যে ভোটার কার্ড! এটাই কীভাবে সম্ভব? আধার কার্ড বা প্যান কার্ডের নম্বর তো কখনও ডুপ্লিকেট হয় না। তাহলে এপিক নম্বরের ক্ষেত্রে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল?” সাগরিকার দাবি, এটি একটি বড় কেলেঙ্কারি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি প্রয়োজন মনে করি, তাহলে আমরা বিজেপির লোকদের নামও প্রকাশ করব, যারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এই অপরাধে জড়িত।”

এদিকে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে। তারা জানায়, একই এপিক নম্বরে দুটি আলাদা ভোটারের ভোটার কার্ড থাকা কোনোভাবেই ভুয়ো ভোটার হতে পারে না। কমিশন আরও জানায়, তারা ইউনিক এপিক নম্বর প্রবর্তন করতে চেষ্টা করবে। তবে তৃণমূল এই ব্যাখ্যাকে যথেষ্ট মনে করছে না এবং অভিযোগ করছে যে ভোটার তালিকায় কারচুপি করা হচ্ছে।

বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের অভিযোগের পালটা জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এপিক নম্বর ইউনিক নয়। এটি রাজ্যভিত্তিক সিরিজ নম্বর হতে পারে, যেমন প্যান কার্ড বা আধার কার্ডের ক্ষেত্রে নম্বর ইউনিক হয়, কিন্তু এপিক নম্বর এমন নয়।” তিনি আরও বলেন, “এপিক নম্বর এক হলেও যদি ভোটারের নাম, বাবার নাম, বয়স, এবং ভোট কেন্দ্র মিলে যায়, তখনই সেটা সমস্যা। কিন্তু যদি শুধু এপিক নম্বর এক হয়, তাহলে তাতে কোনো সমস্যা নেই।”

তৃণমূলের আক্রমণকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে গেছে। একদিকে যেখানে তৃণমূল ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, অন্যদিকে বিজেপি এর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা নিয়ে আপত্তি তুলছে। রাজ্য রাজনীতিতে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।