চলতি বছরে ভারতের চাকরি বাজারে মহিলাদের জন্য চাকরির সুযোগ ৪৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় বড় প্রবৃদ্ধি। নয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই আকর্ষণীয় বৃদ্ধি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের মধ্যে বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি, ব্যাংকিং, আর্থিক সেবা ও বীমা, উৎপাদন এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো সেক্টরে ঘটছে। পাশাপাশি উদীয়মান প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফ্রেশারদের জন্য বেশি সুযোগ
ফোনডিত এর রিপোর্টে অনুযায়ী চলতি বছরে মহিলাদের জন্য উপলব্ধ চাকরির ২৫% নতুন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, নবাগতদের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে আইটি, মানবসম্পদ এবং মার্কেটিং-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতে।
অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ
চাকরির অভিজ্ঞতার দিক থেকে, মহিলাদের জন্য সবচেয়ে বড় অংশ (৫৩%) ০-৩ বছরের ক্যাটেগরিতে পড়ে, তারপর রয়েছে ৪-৬ বছরের অভিজ্ঞতা (৩২%)। তথ্যপ্রযুক্তি/কম্পিউটার – সফটওয়্যার খাত, যা মহিলাদের চাকরির প্রায় ৩৪% অংশ নেয়, এখনো এই বাজারে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খাতগুলির মধ্যে রয়েছে নিয়োগ/স্টাফিং/আরপিও, বিএফএসআই এবং বিজ্ঞাপন/পিআর/ইভেন্ট, যেখানে মহিলাদের চাকরির সুযোগ বাড়ছে।
নারীদের জন্য নতুন সুযোগ: প্রযুক্তি ও উৎপাদন খাতে
ফোনডিত-এর মার্কেটিং বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অনুপমা ভীমরাজকার মতে, “ভারতের চাকরি বাজার দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, যার ফলে মহিলাদের জন্য উচ্চ-প্রযুক্তি এবং বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন শিল্পগুলোতে বেশি সুযোগ তৈরি হচ্ছে”। তিনি আরও বলেন যে, অফিসে কাজ করার ব্যবস্থা ৫৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিয়োগকারীদের অগ্রাধিকারের পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।
এছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং এবং উৎপাদন খাতে মহিলাদের অংশগ্রহণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছরে এই অংশগ্রহণ ৬% থেকে বেড়ে ৮% হয়ে গেছে। প্রযুক্তির উদীয়মান খাত যেমন এআই, সাইবার নিরাপত্তা, ডেটা সায়েন্স এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এ বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বেড়েছে।
টিয়ার-২ ও টিয়ার-৩ শহরেও নারীদের চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি
ভৌগোলিক দিক থেকে রিপোর্টে বলা হয়েছে, আরও বেশি মহিলা এখন টিয়ার-২ ও টিয়ার-৩ শহরগুলোতে চাকরি পাচ্ছেন। নাগপুর, সুরত, কোয়েমবাটর এবং জয়পুরের মতো শহরে মহিলাদের চাকরির শেয়ার ৪১% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগের বছর ৫৯% ছিল টিয়ার-১ শহরে।
বেতন বৃদ্ধি এবং স্টেম ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ
নারীদের চাকরির বেতন বিতরণে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ (৮১%) মহিলার বেতন ০-১০ লক্ষের মধ্যে, তারপর ১১% মহিলার বেতন ১১-২৫ লক্ষ রেঞ্জে, আর ৮% মহিলার বেতন ২৫ লক্ষেরও বেশি।
আরেকটি উৎসাহজনক প্রবণতা হলো, ভারতের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গণিত খাতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে ভারতীয় স্টেম গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে ৪৪% মহিলা, যা একটি বড় অগ্রগতি।
২০২৫ সালের জন্য নারীদের কর্মবাজারে প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে এই নতুন সুযোগগুলো অত্যন্ত ইতিবাচক একটি সংকেত। নানা সেক্টরে এবং বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে, যা আগামী দিনগুলোতে আরও উন্নত এবং সমতাভিত্তিক কর্মসংস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করবে।