জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় ইওয়াতি প্রিফেকচারে একটি বড় দাবানলে অন্তত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শনিবার, দেশজুড়ে প্রায় ২,৫০০ দমকলকর্মী আগুন নেভানোর কাজ করছে, সঙ্গে আকাশে উড়ছে ১৭টি হেলিকপ্টার। এই দাবানলটি অফুনাটো বনাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে, যার আয়তন প্রায় ১,৪০০ হেক্টর (৩,০০০ একর)। এটি ১৯৯২ সালে হোক্কাইডো প্রদেশের কুশিরোতে ঘটে যাওয়া দাবানলের পর, জাপানে সবচেয়ে বড় দাবানল বলে বিবেচিত হচ্ছে। ফায়ার অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির একজন মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই আগুনের কারণে ৪,৬০০ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ১,০০০ এরও বেশি বাসিন্দা সরানো হয়েছে এবং ৮০টিরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দাবানলের কারণে ৭০০টিরও বেশি পরিবার বিদ্যুৎহীন হয়েছে, আর সানরিকু গ্রামের পাশাপাশি অফুনাটো শহরও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। এই দাবানল পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে উঠেছে, কারণ অফুনাটো শহরে এই মাসে মাত্র ২.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা ফেব্রুয়ারির জন্য একটি রেকর্ড কম পরিমাণ বৃষ্টি। পূর্বে ১৯৬৭ সালে ফেব্রুয়ারিতে ৪.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।
এই দাবানল ছাড়াও, শনিবার জাপানের ইয়ামানাশি প্রদেশ ও ইওয়াতি প্রিফেকচারে দুটি আরো দাবানল জ্বলছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। গত বছর ছিল জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে গরম বছর, যা বিশ্বব্যাপী উষ্ণতার বৃদ্ধির প্রমাণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির মূল কারণ হল জলবায়ু পরিবর্তন, যা মানবসৃষ্ট গ্রীনহাউস গ্যাসের ব্যবহারজনিত কারণে ঘটছে।
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকার দাবানলের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আরও অনেক সাহায্য পাঠানো হয়েছে। তবে, উচ্চ তাপমাত্রা এবং খরা পরিস্থিতির কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা উদ্ধারকর্মীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ বেড়ে যাচ্ছে। দাবানলের কারণে পরিবেশগত ক্ষতির পাশাপাশি, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।