মুক্তি সংগ্রামের নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গল্প সংগ্রহ প্রকাশ উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী রবিবার এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তরুণ লেখক জয়প্রকাশ পাণ্ডের লেখা ‘ভূলে বিসরে মত্তওয়ালে’ গল্প সংগ্রহটির উদ্বোধন করেছেন। এই বইটি ভারতের স্বাধীনতা…

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী রবিবার এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তরুণ লেখক জয়প্রকাশ পাণ্ডের লেখা ‘ভূলে বিসরে মত্তওয়ালে’ গল্প সংগ্রহটির উদ্বোধন করেছেন। এই বইটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অপ্রকাশিত নায়কদের ত্যাগ এবং সংগ্রামের ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। এটি ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উপলক্ষে প্রকাশিত, যাতে স্বাধীনতা সংগ্রামের এমন নায়কদের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে, যাদের নাম ইতিহাসে সেভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী বলেন, “‘ভূলে বিসরে মত্তওয়ালে’ একটি শ্রদ্ধা নিবেদন, যাঁরা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, কিন্তু তাঁদের অবদান ইতিহাসে সেভাবে মর্যাদা পায়নি।” তিনি লেখক জয়প্রকাশ পাণ্ডের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং বলেন যে, এই গল্প সংগ্রহটি নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁদের পূর্বপুরুষদের ত্যাগের কথা তুলে ধরবে।

kolkata24x7-sports-News

   

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ, কারণ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বহু অপ্রকাশিত এবং অবহেলিত নায়ক ও যোদ্ধাদের ত্যাগ সম্পর্কে কম আলোচনা হয়েছে। ‘ভূলে বিসরে মত্তওয়ালে’ এই সবই নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করতে সাহায্য করবে, যা ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তুলে ধরবে।

মুখ্যমন্ত্রী ধামী আরও বলেন, “এই বইটি আমাদের এক ঐতিহাসিক শিক্ষা দেবে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাদের পূর্বপুরুষদের সংগ্রামের মূল্য বুঝতে সাহায্য করবে।” এই বইটির মাধ্যমে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হবে, যেখানে আমরা জানব স্বাধীনতা সংগ্রামের অপ্রকাশিত নায়কদের কাহিনী।
এরপর, শনিবার মুখ্যমন্ত্রী ধামী “দেরাদুনের প্যারেড মাঠে উত্তরাখণ্ড ট্রাইবাল ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছিলাম।”। এসময় তিনি রাষ্ট্রীয় আদিবাসী গবেষণা ইনস্টিটিউট দ্বারা আয়োজিত এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন এবং দু’জন লোকগায়ক নরেন্দ্র সিং নেগি এবং কিষান মহিপালকে উত্তরাখণ্ড আদি গৌরব সম্মান – ২০২৫ প্রদান করেন।

এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী ধামী আদিবাসী যুবকদের স্বনির্ভর এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য মুখ্যমন্ত্রী জনজাতি রোজগার উৎকর্ষ যোজনা এর মাধ্যমে প্রতি বছর এক কোটি টাকা বরাদ্দ করার ঘোষণা দেন। তিনি আরও বলেন যে, আদিবাসী গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাঠামোকে সফলভাবে কার্যকর করতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন আদিবাসী সমাজের তৈরি পণ্যের স্টলও পরিদর্শন করেন।

এই উৎসবের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী ধামী বলেন, “এই ধরনের অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং আদিবাসী সমাজের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের প্রসারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।” তিনি আরও বলেন, উত্তরাখণ্ডের ভূমি শুধু তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত নয়, বরং এখানে বসবাসরত থারু, ভোটিয়া, জোন্সারি রাজি, ও বক্সা আদিবাসী সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, লোককলা, হস্তশিল্প, লোকসংগীত, নৃত্য এবং খাদ্যগুলি রাজ্যের সংস্কৃতির একটি বিশেষ পরিচয় প্রদান করে।

মুখ্যমন্ত্রী ধামী আরও বলেন, “রাজ্য সরকার উত্তরাখণ্ডের আদিবাসী জনগণের কল্যাণে কাজ করছে এবং তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।” এই সময়ে তিনি উল্লেখ করেন, রাজ্যের ১২৮টি আদিবাসী গ্রাম ‘প্রধানমন্ত্রী জনজাতি উন্নত গ্রাম অভিযান’ এর আওতায় নির্বাচিত হয়েছে, যা তাদের উন্নয়ন এবং কল্যাণে সহায়ক হবে।

উত্তরাখণ্ডের এই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রয়াস আরও একবার প্রমাণিত হলো এই আদিবাসী উৎসবের মাধ্যমে, যা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে সংহতি এবং সহযোগিতা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।