ভূতুড়ে ভোটারের অভিযোগের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, দু বা তার বেশি ভোটারের যদি একই এপিক (ইলেক্টরস ফটো আইডেন্টিটি কার্ড) নম্বর থাকে, তা অবশ্যই ভূতুড়ে ভোটার হওয়ার প্রমাণ নয়। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের চাপের মুখে কমিশন এ বিবৃতি দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে, একাধিক ভোটারের একই এপিক নম্বর থাকলেও তাদের ভুয়ো ভোটার বলা যাবে না। কমিশন আরো স্পষ্ট করে বলেছে, এপিক নম্বর এক হলেও, ভোটারের অন্যান্য পরিচিতি যেমন, ভোটার কার্ডের নাম, বিধানসভা কেন্দ্রের নাম, এবং পোলিং বুথের নামের মাধ্যমে তাদের আলাদা করা সম্ভব। এর ফলে একে অপরের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে না এবং নিশ্চিত করা যাবে যে কেউ নিজের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে।
এ ধরনের বিবৃতি দেওয়ার পর, নির্বাচন কমিশন একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছিল যে, একাধিক রাজ্যে একই এপিক নম্বরের আওতায় একাধিক ভোটারের তথ্য মিলছে। কমিশন এ বিষয়ে জানায় একাধিক ভোটারের এপিক নম্বর এক হতে পারে, কিন্তু সেটি ভুয়ো ভোটার হওয়ার কারণ নয়। মূলত, ভোটারদের মধ্যে পরিচয়ের বৈশিষ্ট্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে তাদের আলাদা করা যায়।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্বেই অভিযোগ তুলেছেন যে, ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ফের ভূতুড়ে ভোটার ঢোকানোর চেষ্টা করছে। তিনি দিল্লি, হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রের উদাহরণ তুলে বলেন, সেখানে কীভাবে ভূতুড়ে ভোটারদের ব্যবহার করা হয়েছিল। মমতা সেজন্য রাজ্যস্তরে একটি কমিটি গঠন করেছেন, যা ভূতুড়ে ভোটারের সন্ধানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তদন্ত করছে।শাসকদলের দাবি, ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এমন ‘ভূতুড়ে ভোটার’ চিহ্নিত হয়েছে।
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। নির্বাচন কমিশনের বিবৃতি দেখে মনে হচ্ছে তারা ভোটারদের সঠিক পরিচিতি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করতে চায় এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে সকল ধরণের সন্দেহ দূর করতে চায়।
এই বিবৃতি সেই পরিস্থিতির মধ্যে এসেছে, যখন নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে অভিযোগের সংখ্যা বেড়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।