মণিপুরে সম্প্রতি মেইতেই গোষ্ঠী আরাম্বাই তেনগোলের তরফে ২৪৬টি অস্ত্র রাজ্যপাল অজয় কুমারের হাতে তুলে দেওয়ার পর মেইতেই মন্দির ‘কোংবা মারু’ মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলা নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যে। মণিপুরের পূর্ব ইম্ফলের ওয়াকান এলাকায় মেইতেইদের প্রার্থনার স্থলে কুকি জঙ্গিরা গুলি চালিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি শাসনের আওতায় মণিপুরে এটি প্রথম আইনশৃঙ্খলা পর্যালোচনা বৈঠক, যেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠক থেকে অমিত শাহ নিরাপত্তা বাহিনীকে বড় নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের সব রাস্তায় অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। তাঁর আরও নির্দেশ, যারা রাস্তা অবরোধ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, মণিপুরে সংঘর্ষের কারণে গত বছর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই বিঘ্নিত হয়ে পড়েছিল। মূলত, কুকি ও মেইতেই জাতির মধ্যে দাঙ্গা এবং সংঘর্ষের জেরে রাজ্যের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২০২৩ সালের দিকে মণিপুরে এই জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হয়, যা এখনও থামেনি।
মণিপুরের রাজ্যপাল ইতোমধ্যে মণিপুরের মেইতেই গোষ্ঠীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো সরকারে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছেন। সম্প্রতি, আরাম্বাই তেনগোল মেইতেই গোষ্ঠী রাজ্যপাল অজয় কুমারের হাতে ২৪৬টি অস্ত্র তুলে দেয়। এর পরেই, মেইতেই মন্দির ‘কোংবা মারু’-তে হামলার ঘটনা ঘটে, যাকে কুকি জঙ্গিদের কাজ বলে মনে করা হচ্ছে। হামলার পর ওয়াকান এলাকায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয় এবং পুলিশ মেইতেই ও কুকি গ্রামগুলির নেতৃবৃন্দকে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
অমিত শাহ মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন শুরু হওয়ার পর প্রথমবার এই ধরনের বৈঠকে বসেন, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। উল্লেখযোগ্য, ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন কার্যকর হয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করার পর এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অমিত শাহের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার সজাগ রয়েছে। বিশেষ করে, কুকি-মেইতেই সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা এবং শান্তির জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে। এখন, মণিপুরে কর্তৃপক্ষ শান্তি বজায় রাখতে এবং দাঙ্গা-সহিংসতা এড়াতে শক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে। রাজ্য প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী একসঙ্গে মণিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে, এবং অমিত শাহের সাম্প্রতিক নির্দেশের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।