প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে স্থানীয়দের বাধার (Chopra Protest) মুখে পড়েন পুলিশ। শনিবার দুপুরে চোপড়ার কালিকাপুর এলাকায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
অভিযোগ, স্থানীয় মহিলারা পুলিশের কাজকে বাধাগ্রস্ত করে মুজিবরকে পালাতে সাহায্য করেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চোপড়ার এলাকার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে, পুলিশ শেষমেশ মুজিবরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মুজিবর রহমান চুটিয়াখোর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য। তার বিরুদ্ধে মাদক পাচার ও অস্ত্র পাচারের অভিযোগ রয়েছে। শনিবার দুপুরে চোপড়া থানার পুলিশ মুজিবরকে গ্রেপ্তার করতে যায়। প্রথমে পুলিশ তার বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল, কিন্তু মুজিবর বাড়ির পিছন দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তিনি বাঁশবন টপকিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এই সময় স্থানীয় মহিলারা পুলিশকে বাধা দিতে থাকেন।
পুলিশের উপর স্থানীয় মহিলাদের বাধার কারণে গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়। এমনকি, পুলিশ যখন মুজিবরকে পুকুর থেকে তোলার চেষ্টা করে, তখন আবার তাকে বাধা (Chopra Protest) দেওয়া হয়। এলাকার মহিলারা তাকে ঘিরে রেখে গার্ড হিসেবে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে মুজিবর ধানখেত ধরে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করেন, কিন্তু পুলিশ শেষমেশ তাকে ধাওয়া করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এই ঘটনায় ২৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলা রয়েছেন। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস জানান, ‘মুজিবরের বিরুদ্ধে অস্ত্র পাচারের অভিযোগ ছিল। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল, কিন্তু গ্রামের মহিলারা তাকে গ্রেপ্তার করতে বাধা দেয়।’
মুজিবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি এলাকার মাদক পাচার ও অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার গ্রেপ্তারির ঘটনায় এলাকার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের অভিযানে বাধা দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয় মহিলাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তবে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
এদিকে, পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারি অভিযান চলাকালীন বিভিন্ন ধরনের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। স্থানীয় মহিলারা পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন, এবং তারা মুজিবরকে পালাতে সাহায্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে, পুলিশ কঠোরভাবে বিষয়টি তদন্ত করছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
পুলিশ প্রশাসন স্থানীয় এলাকায় একাধিক অভিযান চালাচ্ছে এবং বাকিদের ধরতে তৎপর। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, মুজিবরের বিরুদ্ধে আগেও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল, এবং তাকে ধরার জন্য পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান চালাচ্ছিল। তার গ্রেপ্তারি অবশ্য এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং পরিস্থিতি এখনো চরম উত্তেজনায় রয়ে গেছে।
এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া মেনে নেওয়া হবে না এবং এ ধরনের কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আরও তদন্ত শুরু করেছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।