দিল্লি আদালতের ঐতিহাসিক রায়, ৭ বছরের শিশুর ধর্ষণ-হত্যায় ছেলের ফাঁসি, বাবার যাবজ্জীবন

দিল্লির তিস হাজারি আদালত শুক্রবার একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় রাজেন্দ্র ওরফে সতীশকে মৃত্যুদণ্ড এবং তার বাবা রামসরণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত এই মামলাকে…

delhi-court-historic-verdict-7-year-old-rape-murder-death-penalty-son-life-imprisonment-father

short-samachar

দিল্লির তিস হাজারি আদালত শুক্রবার একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় রাজেন্দ্র ওরফে সতীশকে মৃত্যুদণ্ড এবং তার বাবা রামসরণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত এই মামলাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ৩৭৬-এবি ধারার অপরাধে রাজেন্দ্রকে দিল্লি হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে।

   

বিশেষ POCSO বিচারক ববিতা পুনিয়া, ২০১৯ সালে বিহারে ৭ বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে রাজেন্দ্রকে এই শাস্তি দেন। তিনি বলেন, “এই জঘন্য অপরাধে ক্ষমা দেখালে ভুক্তভোগী ও সমাজের প্রতি আদালতের দায়িত্ব ব্যর্থ হবে। অভিযুক্ত নির্মমভাবে শিশুটিকে হত্যা করেছে, যার নিরাপদে বেড়ে ওঠার অধিকার আমরা রক্ষা করতে পারিনি।”

রামসরণকে যাবজ্জীবন দিয়ে আদালত জানায়, “তিনি অপহরণে উপস্থিত ছিলেন না, তাই ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ এক্ষেত্রে পড়ে না। তবে ছেলের ধর্ষণের প্রমাণ মুছে ফেলতে নিরীহ শিশুটির হত্যায় অংশ নিয়েছেন, তাই ক্ষমার যোগ্য নন তিনি।” বিচারক বলেন, “বাবা যদি ছেলেকে প্রথম অপরাধে শাসন করতেন, তাহলে এই ঘটনা ঘটত না। কিন্তু তিনি ছেলের অপকর্ম ঢাকতে গিয়ে হত্যায় জড়িয়ে পড়েছেন বাবা।”

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ এই বাবা-ছেলেকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। রাজেন্দ্রকে POCSO আইনের ৬ ধারা, IPC-র ৩৬৩ (অপহরণ), ৩৬৬ (যৌন
নির্যাতন), ৩৭৬-এবি (১২ বছরের কম বয়সী মেয়েকে ধর্ষণ) ও ৩০২ (হত্যা) ধারায় দোষী ঘোষণা করা হয় এবংতাঁকে ৩৬৩ ধারায় ৫ বছর ও ৩৬৬ ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। বাবা রামসরণকে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ড. শরওয়ান কুমার বিষ্ণোই বলেন, “রাজেন্দ্র ২০১৬-তে ৮ বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল। জামিনে থাকাকালীন ২০১৯-এ আরেকটি ৭ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যা করে। সে সমাজের জন্য বিপদ, তাঁর ফাঁসির সাজা হওয়া দরকার।

মামলাটি ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে দিল্লি পুলিশের কাছে নথিভুক্ত হয়। পুলিশের তদন্ত চলাকালীন শিশুটির মৃতদেহ পার্কে পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে, ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুনের বিষয়টি উঠে আসে। দিল্লী পুলিশ CCTV ফুটেজে অভিযুক্তদের স্কুটারে প্লাস্টিকের ব্যাগ নিয়ে যেতে দেখার মাধ্যমে চিহ্নত করে।