CAG রিপোর্টে ফাঁস আমি আদমি সরকারের দুর্নীতি

দিল্লি বিধানসভায় শুক্রবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা কম্পট্রলার এন্ড অডিটর জেনারেল (CAG) এর প্রতিবেদন তুলে ধরেন, যা দিল্লির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনায় গুরুতর…

দিল্লি বিধানসভায় শুক্রবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা কম্পট্রলার এন্ড অডিটর জেনারেল (CAG) এর প্রতিবেদন তুলে ধরেন, যা দিল্লির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনায় গুরুতর অমিল এবং অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিল্লির আম আদমি পার্টি সরকার COVID-19 মহামারী পরিচালনায় বড় ধরনের গাফিলতি করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক মুক্তিপ্রাপ্ত ৭৮৭.৯১ কোটি টাকার মধ্যে শুধুমাত্র ৫৮২.৮৪ কোটি টাকা ব্যবহার করা হয়েছে, যা একটি বড় আর্থিক দুর্নীতির ইঙ্গিত বলে CAG রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের CAG পারফরম্যান্স অডিট রিপোর্টে ২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে মহল্লা ক্লিনিকের কাজের অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২১টি মহল্লা ক্লিনিকে টয়লেট ছিল না, ১৫টি ক্লিনিকে পাওয়ার ব্যাকআপ ছিল না, ৬টি ক্লিনিকে চেক-আপ টেবিল ছিল না এবং ১২টি ক্লিনিকে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য কোনো অ্যাক্সেস ছিল না। এর পাশাপাশি, ৪৯টি AYUSH ডিসপেনসারির মধ্যে ১৭টিতে পাওয়ার ব্যাকআপ, ৭টিতে টয়লেট এবং ১৪টিতে জলের ব্যবস্থা ছিল না। এছাড়া, CAG রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় করা হয়নি। যেখানে ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, সেখানে মাত্র ৩০.৫২ কোটি টাকা ব্যবহৃত হয়েছে। স্বাস্থ্য সরঞ্জাম এবং ওষুধের জন্য বরাদ্দ ১১৯.৮৫ কোটি টাকার মধ্যে ৮৩.১৪ কোটি টাকা অপব্যয় হয়েছে।

   

স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়েও অমিলের কথা তুলে ধরেছে রিপোর্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, দিল্লির হাসপাতালগুলিতে স্বাস্থ্য কর্মীর সংকট এবং দীর্ঘ সময় ধরে সার্জারি ও চিকিৎসা সেবার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। রাজীব গান্ধী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অনেক সেবা যেমন মডুলার ওটি, ট্রান্সপ্লান্ট আইসিইউ, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেবা কার্যকর ছিল না। অন্যদিকে, জানকপুরী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বেশ কিছু পরিষেবা, যেমন মডুলার ওটি, ব্লাড ব্যাংক, মেডিকেল গ্যাস পাইপলাইন এবং জরুরি পরিষেবা কার্যকর ছিল না।

এছাড়া, সুশ্রুতা ট্রমা সেন্টারে ২৪ ঘণ্টা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা ছিল না। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২৭টি হাসপাতালের মধ্যে ১৪টি হাসপাতালের আইসিইউ সেবা, ১৬টি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক সেবা, ৮টি হাসপাতালের অক্সিজেন সেবা, ১৫টি হাসপাতালের মর্চুয়ারি সেবা এবং ১২টি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবা ছিল না। এই পরিস্থিতি থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনা নিয়ে বড় ধরনের অব্যবস্থাপনা এবং অদক্ষতা ছিল, যা জনগণের জন্য স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। CAG রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, প্রজনন, মাতৃ, নবজাতক এবং কিশোর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রকল্পগুলির জন্য বরাদ্দ অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় করা হয়নি এবং তাতে প্রায় ৯৩ শতাংশেরও বেশি অর্থ অপব্যয় হয়েছে।