Sovan-Ratna Divorce Case: শোভন-রত্না মামলায় নয়া বিতর্ক, কল্যাণের হুমকি মন্তব্যে তোলপাড়

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি।…

Calcutta High Court Asks Ratna Chatterjee to Submit Statement on Alleged Threat Against Kalyan Banerjee"

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। শুক্রবার এই মামলা নিয়ে আদালত শুনানি শুরু হলে বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্য রত্নার বক্তব্য জানাতে বলেছেন। তিনি রত্নার আইনজীবীকে বলেন, “দুপুর ১টার মধ্যে আপনার মক্কেলের বক্তব্য জানাতে হবে।”

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ ছিল, রত্না চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করেছেন যা তাকে এবং তার পেশাগত অবস্থানকে আক্রমণ করেছে। বিশেষ করে, এক সংবাদমাধ্যমে রত্না বলেছিলেন, “আমি তো কল্যাণদার কথাতেই শোভনকে বিবাহবিচ্ছেদ দিচ্ছি না।” এই মন্তব্যে তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী কল্যাণের প্রতি কটূক্তি করেছেন বলে দাবি করেন কল্যাণ। তার মতে, এই মন্তব্যটি আদালত অবমাননা এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের শামিল। তিনি আরও বলেন, “বিবাহবিচ্ছেদ দেবেন না, লড়াই করুন, আমি তোর পাশে আছি”—এমন বক্তব্য শোভনের আইনজীবীকে এক ঘণ্টা ধরে পরামর্শ দেওয়ার জন্য আদালতে আনা হয়েছিল। কল্যাণের অভিযোগ, রত্না তার পেশাগত ভূমিকা অবমাননা করেছেন এবং এ ধরনের মন্তব্য আদালত এবং আইনজীবীর বিরুদ্ধে ছিল।

kolkata24x7-sports-News

   

এদিকে, রত্নার আইনজীবী পাল্টা অভিযোগ করেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মক্কেলের বাবা নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করেছেন। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার মতো বক্তব্য রেখেছেন, যদি সে ধরনের কিছু ঘটে, তবে মামলা করা হবে।” রত্নার আইনজীবী আরও দাবি করেন যে, কল্যাণের মন্তব্য ছিল অযথা এবং আদালতের শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

এরপর, বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্য এই পরিস্থিতি নিয়ে রত্নার বক্তব্য জানতে চান এবং বলেন, “এই ধরনের সমস্যার জন্য আদালতে অযথা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আপনাদের দাবি বা বক্তব্য যেন দ্রুত আদালতে দেওয়া হয়।” বিচারপতি আরও বলেন, “আপনারা কেন আদালতকে দুটি দিন সময় দেওয়ার পরেও কোনও অবস্থান জানালেন না? এই অবস্থায় আমরা কি আশা করতে পারি না?”

তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন। ২০১৭ সালে আলিপুর আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন শোভন। সেই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে গেছে, তবে রত্না তার পক্ষ থেকে কিছু নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন করেছিলেন, যা আলিপুর আদালত খারিজ করে দেয়। এরপর তিনি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেছিলেন। আদালতে রত্নার আইনজীবী তার পক্ষে আরও কিছু সাক্ষী আনার আবেদন জানালেও আদালত তা গ্রহণ করেনি।

এই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন রত্না কল্যাণের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কল্যাণ যখন শোভনের পক্ষ থেকে সওয়াল করেন, তখন রত্না সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, কল্যাণের ভূমিকা যথার্থ ছিল না এবং তা অগ্রহণযোগ্য। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে ‘হুমকি’ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করে আদালতে যান।

কল্যাণের এই অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত শুক্রবার রত্নাকে ১টার মধ্যে তার বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দেয়। এখন এই মামলার পরবর্তী শুনানি কীভাবে এগোবে, তা নিয়ে সকলের নজর।