বুধবার, সিবিআই নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও উঠে এসেছে। তবে চার্জশিটে স্পষ্টভাবে অভিষেকের পরিচয় কী, তা উল্লেখ করা হয়নি। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের মেগা সভায় নিজের বক্তব্য রেখেছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি সিবিআই-এর চার্জশিট প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “২০২০ সালে বলেছিলাম, যদি আমার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে, তবে আমাকে শাস্তি দিন। যদি কেউ দশ পয়সাও অবৈধভাবে গ্রহণ করে থাকে, তাহলে চার্জশিট দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। সমন দিয়ে ডাকতে হবে না। ফাঁসির মঞ্চে যেতে হবে, আমি মৃত্যু বরণ করব। আজও বলছি, প্রমাণ থাকলে তারা প্রমাণ করুন।” অভিষেক আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রমাণ থাকে, তাহলে তা প্রকাশ করুন। আমি সত্যের কাছে কখনও মাথা নত করিনি, এবং ভবিষ্যতেও করব না।”
তিনি এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, “নবজোয়ারের সময় সিবিআই আমাকে ডেকেছিল। কী ঘটেছিল? আমি অন্য ধাতুতে তৈরি। যতবারই আমাকে আঘাত করবেন, ততবারই আমি শক্ত হয়ে উঠব। আমাকে বশ্যতা স্বীকার করার জন্য আপনাদের কাছে আমি কিছুই চাই না। আমি মানুষের কাছে গিয়ে মাথা নত করব, কিন্তু আমি বশ্যতা স্বীকার করব না।”
সিবিআই-এর তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে বলা হয়েছে যে, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িতে শান্তুনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। সেখানেই কুন্তল ঘোষের নির্দেশে একটি কথোপকথনের রেকর্ডিং করা হয়, যা পরে সিবিআই-এর হাতে আসে। এই রেকর্ডিং থেকেই ওই চার্জশিট পেশ করা হয়।
এছাড়া, গতকাল সিবিআই যখন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করে, তখন সে সংক্রান্ত তথ্য জনসমক্ষে আসে। সিবিআই-এর দাবি, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িতে হওয়া বৈঠকে তৃণমূলের অন্যান্য নেতা-কর্মীদের নাম উঠে আসে, যা ওই চার্জশিটের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
তবে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তাঁর প্রতি যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা তিনি সম্পূর্ণভাবে খণ্ডন করেছেন। তিনি বলেন, “যতবারই আমাকে আক্রমণ করা হয়েছে, আমি আরো দৃঢ় হয়ে উঠেছি। বাংলার মানুষ আমাকে জানে, তারা জানে আমি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে সহমত জানাই না।”
অভিষেকের এই বক্তব্যে দলের নেতা-কর্মীরা তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “এমন কোনো প্রমাণ নেই যা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে।” অভিষেক আরও বলেন, “আমাদের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে যেসব ষড়যন্ত্র চলছে, তাদের কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমরা সঠিক পথে চলতে থাকব, বাংলার মানুষের পাশে থাকব।”
অভিষেকের কথায় পরিষ্কার যে, তিনি যে কোনও ধরনের ষড়যন্ত্র বা মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন এবং সততার সঙ্গে নিজের কাজ চালিয়ে যাবেন.