জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরিতে ফের সেনার গাড়িতে হামলা চালাল জঙ্গিরা। পুলওয়ামার মতো একটি ঘটনা আবার ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সেবারের মতো এবারও বড় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টায় রাজৌরির সুন্দরবাণী এলাকায় ফাল গ্রামে জঙ্গিরা সেনাবাহিনীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। হামলার সময় সেনাবাহিনীর গাড়িটি টহল দিচ্ছিল এবং ঘটনাস্থলে একটি জল ট্যাঙ্কের কাছে পৌঁছানোর পরই জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করে।
প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর গাড়িটি যখন টহল দিচ্ছিল, তখন অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকধারীরা আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে। সেনারা দ্রুত পরিস্থিতি বুঝে গাড়ি নিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে আসে এবং হামলার পর কিছুক্ষণের মধ্যে এলাকা ঘিরে ফেলে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এটি এক ধরনের সতর্কতামূলক হামলা হিসেবে ধরা হচ্ছে, কারণ পুলওয়ামায় ২০১৯ সালে সেনার কনভয়ে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছিল, যা এক তীব্র রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। সেসময় দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং ভারতীয় সেনা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ চালায়। এখন, রাজৌরির এই হামলা পুলওয়ামার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর, সারা দেশে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এই হামলার জন্য দায়ী ছিল এবং একাধিক ভারতীয় সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছিলেন। ভারত সরকার পাকিস্তানকে কঠোরভাবে সমর্থন না দেওয়ার জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছিল এবং পাল্টা আক্রমণ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের ভূখণ্ডে গিয়ে অভিযান চালায় এবং একাধিক জঙ্গিকে মেরে ফেলে।
তবে রাজৌরিতে সাম্প্রতিক হামলার পেছনে কী উদ্দেশ্য ছিল তা স্পষ্ট হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে এবং হামলাকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে।
এই ঘটনার পর রাজৌরির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী পুরো এলাকা স্যানিটাইজ করতে তৎপর রয়েছে। বিশেষ করে, শীতে সাধারণত জঙ্গিদের হামলা বাড়ে, ফলে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনী আরও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে, এই হামলার সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জঙ্গিরা আবারও ভারতীয় সেনাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাচ্ছে। ভারতের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত, তবে এর জন্য দেশবাসীকে অতি সতর্ক থাকতে হবে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ আগামী দিনগুলিতে আরও শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরিকল্পনা করছে। এই হামলার পর, সরকারও সতর্ক বার্তা দিয়েছে, যাতে এই ধরনের পরিস্থিতি ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে।
এটা স্পষ্ট যে, রাজৌরির এই হামলা একটি বড় পরিকল্পনার অংশ হতে পারে, তবে সেনাবাহিনী এবং প্রশাসন সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।