দিল্লির আবগারি নীতিতে ২০০২ কোটি টাকার ক্ষতি, প্রশ্নের মুখে আপ

দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকার আবগারি নীতির কারণে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সম্প্রতি কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল এর রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে,…

দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকার আবগারি নীতির কারণে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সম্প্রতি কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল এর রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে, এই নীতির ফলে রাজ্য সরকার ২০০২ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে। রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর, দিল্লি বিধানসভা স্পিকার বিজেন্দ্র গুপ্ত এ বিষয়ে তদন্তের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই বিষয়টি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিকে পাঠানো হবে এবং সেখানে তদন্তের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বিধানসভার অধিবেশনের সময়সীমা ৩ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল -এর রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লি সরকারের নতুন আবগারি নীতি, যা ২০১৭-১৮ থেকে ২০২০-২১ সালের মধ্যে কার্যকর ছিল, এর ফলে রাজকোষে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট:

   

১. লাইসেন্স নবায়ন সমস্যা: কিছু মদ দোকানের লাইসেন্স যে সকল ব্যবসায়ীরা জমা দিয়েছিলেন, তা পুনরায় নবায়ন না করার কারণে রাজ্য সরকার ৮৯০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। লাইসেন্স পুনরায় চালু না করায় রাজ্য সরকারের রাজস্ব আয়ের উপর বড় প্রভাব পড়েছে।

২.মদ দোকান বন্ধ থাকা: নীতির বাস্তবায়নে দেরি হওয়ার কারণে আরও ৯৪১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, কারণ মদ দোকানগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। দোকানগুলো বন্ধ থাকায় সরকারের রাজস্ব এবং স্থানীয় ব্যবসাগুলির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

৩. করছাড়ের কারণে ক্ষতি: করোনার কারণে মদ ব্যবসায়ীদের করছাড় দেওয়ার ফলে রাজস্ব কমে গেছে। এতে প্রায় ১৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যদিও সরকারের উদ্দেশ্য ছিল ব্যবসায়ীদের আর্থিক সঙ্কট মেটানো, কিন্তু এর ফলে সরকারের ক্ষতি হয়েছে।

৪. নিরাপত্তা আমানত না নেওয়া: বিশেষ জোনাল লাইসেন্স ধারকদের থেকে সিকিউরিটি ডিপোজিট নেওয়া হয়নি, যার ফলে ২৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

স্পিকার বিজেন্দ্র গুপ্ত এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, “দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে প্রাক্তন সরকারের আবগারি নীতির সিএজি রিপোর্ট পেশ হয়েছে। আমরা এই অধিবেশনে যতটা সম্ভব রিপোর্ট উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি। তাই অধিবেশনের সময়সীমা ৩ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “এটা স্পষ্ট যে, প্রাক্তন সরকারের নীতির কারণে ২০০২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে শাসক ও বিরোধী দলের সদস্যদের নিয়ে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি গঠন করা হবে। প্যাক তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর, বিধানসভা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”

বিজেপি সরকার দিল্লির আপ সরকারের এই আবগারি নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে এবং এখন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। প্যাক গঠন ও অধিবেশন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেখাচ্ছে যে, বিজেপি সরকার কেজরিওয়াল সরকারকে এই বিপুল ক্ষতির জন্য জবাবদিহি করানোর জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।