ডাক্তারদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ ঘোষণা, নয়া শর্তে শোরগোল

বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। হাসপাতালের বাইরে রোগী দেখার জন্য চিকিৎসকদের নিয়ে নানা সমস্যা সামনে এসেছে, এমনকি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা…

CM Mamata Banerjee Holds Press Meeting at Nabanna

বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। হাসপাতালের বাইরে রোগী দেখার জন্য চিকিৎসকদের নিয়ে নানা সমস্যা সামনে এসেছে, এমনকি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা সময়মতো উপস্থিত না থাকার অভিযোগও ছিল। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে একাধিক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনাও এই ধরনের অভিযোগের মধ্যে পড়ে। অভিযোগ ছিল যে, হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর সব দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সিনিয়ররা প্রাইভেট প্র্যাকটিসে ব্যস্ত থাকেন।

এই পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার, ধনধান্যে স্টেডিয়ামে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে তিনি প্রাইভেট প্র্যাকটিসের বিষয়টি নিয়ে এক বড় ঘোষণা করেন। এর আগে, স্বাস্থ্য দপ্তর কিছু শর্ত আরোপ করে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি দিয়েছিল। বলা হয়েছিল, সরকারি হাসপাতালে কাজ করার সময় চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য হাসপাতালের ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে রোগী দেখতে হবে। তবে সোমবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সেই পরিধি বাড়িয়ে ৩০ কিলোমিটার করার ঘোষণা করেন।

   

এছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেন, “৮ ঘণ্টা সরকারি পরিষেবা দেওয়ার পর আপনি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারেন, তবে ৮ ঘণ্টা পরিষেবা দিতে হলে কোথাও যাওয়ার অনুমতি নেই।” তিনি ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলেন, “সরকারি পরিষেবা দেয়ার সময় কোথাও যাবেন না, প্লিজ। হাসপাতালেই থাকুন, সেখানে সব ধরনের পরিকাঠামো রয়েছে। আপনারা ৮ ঘণ্টা কাজ করে তারপর প্রাইভেট প্র্যাকটিস করুন, এতে কোনও আপত্তি নেই।”

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের দায়িত্ব দিয়ে সিনিয়ররা যদি চলে যান, তবে সেটা ঠিক নয়। সিনিয়ররা নিজেদের দায়িত্ব সামলাবেন এবং জুনিয়রদের দায়িত্ব না দিয়ে ৮ ঘণ্টা সেবা দিতে থাকবেন।” এর মাধ্যমে তিনি এক ধরনের সতর্কবার্তা দেন যে, প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য সরকারি পরিষেবা ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে পরিষেবা দেওয়া এবং রোগী দেখার জন্য চিকিৎসকদের যেকোনো ধরনের সমস্যা হলে তা দ্রুত সমাধান করা হবে। তিনি ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, সরকারি পরিষেবার মানের কোনো ক্ষতি না হয়।”

এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “সরকারি পরিষেবা দেবার পর যদি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা হয়, তাহলে সেটি চিকিৎসকদের অধিকার। তবে সরকারি হাসপাতালের কাজ যাতে অবহেলিত না হয়, সেটা নজর রাখতে হবে।”

মুখ্যমন্ত্রীর এই নতুন পদক্ষেপে রাজ্যের চিকিৎসকদের মাঝে নতুন আশা দেখা যাচ্ছে। তবে, কীভাবে এই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হবে এবং কতটা প্রভাব ফেলবে তা সময়ই বলবে।