সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই ‘কোন্দল’ পদ্ম শিবিরে

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক অঞ্চলের বিজেপি (BJP) মণ্ডল সভাপতিদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এর পর থেকেই শুরু হয়েছে তীব্র অস্বস্তি। দলের ভিতরে গোষ্ঠীকোন্দল এবং…

Discontent in BJP: Internal Conflict Erupts After Release of President List

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক অঞ্চলের বিজেপি (BJP) মণ্ডল সভাপতিদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এর পর থেকেই শুরু হয়েছে তীব্র অস্বস্তি। দলের ভিতরে গোষ্ঠীকোন্দল এবং অসন্তোষের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। মণ্ডল সভাপতিদের বদলির এই সিদ্ধান্তে দলের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছে।

বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার ১৮টি মণ্ডলের মণ্ডল সভাপতির নাম প্রকাশের পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কিছু মণ্ডলে পুরনো সভাপতিদের পুনরায় দায়িত্ব দেওয়া হলেও বেশ কিছু মণ্ডলে নতুন সভাপতি নিয়োগ করা হয়। যদিও এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, এই পরিবর্তনগুলি স্বজনপোষণ এবং দল বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে হয়েছে। ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট দিয়ে দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

   

এমন পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে। দলের নেতারা যখন পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যস্ত, তখন ঘাসফুল শিবির বিষয়টিকে কটাক্ষ করে। তাদের মতে, বিজেপির মধ্যে এই গোষ্ঠীকোন্দল এবং কর্মী অসন্তোষ একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের দাবি, নীতিহীন দল হওয়ায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির (BJP) একাংশের দাবি, জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে, যা দলের অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে পারে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একইসঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বও এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় আরও বেশি সংকটে পড়েছে।

তৃণমূলের দাবি, এই ধরনের গোষ্ঠীকোন্দল বিজেপির নৈতিক সংকটের প্রমাণ। তাদের বক্তব্য, ‘বিজেপি শুধু ক্ষমতায় থাকতে চায়, কিন্তু দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে।’ তাদের মতে, এমন ধরনের অস্থিরতা ও অস্বস্তি আগামীদিনে বিজেপির জন্য বিপদ হতে পারে।

গেরুয়া শিবিরের (BJP) কিছু নেতা-কার্যকর্তা দাবি করেছেন, বৃহত্তর দলের মধ্যে কিছুটা এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তারা আশা করছেন, পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান হবে। তাদের বক্তব্য, এটি একটি সাময়িক সমস্যা, যা সমাধান করা সম্ভব। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবে, তা সময়ই বলে দেবে।

একদিকে দলের অন্দরেই গোষ্ঠীকোন্দল এবং কর্মী অসন্তোষের জেরে বিজেপির পরিস্থিতি অনেকটা সংকটময় হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। সমগ্র ঘটনা সামনে আসার পর, বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে কারণ এটি বিজেপির সংগঠন এবং নেতৃত্বের মধ্যে অস্থিরতার সংকেত দিচ্ছে।

বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির (BJP) ভবিষ্যত কী হবে, তা নির্ভর করছে দলের নেতৃত্বের উপর। তবে দলীয় সদস্যদের মধ্যে এমন ধরনের অসন্তোষ এবং খোলাখুলি ক্ষোভ প্রকাশ পাওয়াটা তাদের জন্য বড় সংকেত হতে পারে।