ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO এবার নতুন এক মিশনে নজর দিচ্ছে। মঙ্গল গ্রহে ‘মঙ্গলযান-২’ (Mangalyaan-2) নামক মহাকাশযান অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, যা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মহাকাশ মিশন হতে চলেছে। যদি এই মিশন সফল হয়, তবে ভারত হবে চতুর্থ দেশ যারা মঙ্গলের পৃষ্ঠে মহাকাশযান অবতরণ করতে পারবে।
মঙ্গলযান-২ মিশনটি মহাকাশ বিষয়ক কমিশনের অনুমোদন পেয়ে গেছে এবং বর্তমানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই মিশনের লক্ষ্য হল, মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে ল্যান্ডার ও রোভার পাঠানো এবং সেখানে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান চালানো।
২০১৪ সালে ISRO মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে মঙ্গলযান বা Mars Orbiter Mission (MOM) পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় ভারতের সক্ষমতা প্রদর্শন করেছিল। এবার, ‘মঙ্গলযান-২’-এর মাধ্যমে আরও গভীরভাবে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ এবং তার পরিবেশের বিশ্লেষণ করা হবে।
এটি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণায় একটি বড় পদক্ষেপ, যেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। মঙ্গলযান-২ মিশনে স্কাই ক্রেন, সুপারসনিক প্যারাসুট, হেলিকপ্টার এবং রোভার ব্যবহার করা হবে, যা আগে কেবল আমেরিকা এবং চিনের মতো দেশগুলোই ব্যবহার করেছে। নাসার পার্সিভারেন্স রোভারও মঙ্গলের মাটিতে অবতরণের সময় এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল।
ISRO-এর লক্ষ্য, মঙ্গল গ্রহে সঠিকভাবে ল্যান্ডার এবং রোভার পাঠিয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান চালানো, যাতে মঙ্গলগ্রহের ভূতত্ত্ব, আবহাওয়া এবং প্রাণের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। এই মিশনটির মাধ্যমে ভারতের মহাকাশ গবেষণা আরও একধাপ এগিয়ে যাবে এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় ভারতের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
এই মিশনটির সঙ্গে ভারতের ২০৩৫ সালের মধ্যে মহাকাশে স্পেশ স্টেশন তৈরি এবং ২০৪০ সালের মধ্যে প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারীকে চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। ISRO এর ভবিষ্যৎ লক্ষ্য, একাধিক চন্দ্রযান মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করা এবং Next Generation Launch Vehicle (NGLV) তৈরি করা।
‘মঙ্গলযান-২’-এর সফলতা ভারতের মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় ভারতকে আরও একটি মাইলফলকে নিয়ে যাবে।