সার্ক (South Asian Association for Regional Cooperation) নিয়ে বাংলাদেশকে স্পষ্ট বার্তা দিল ভারত। শুক্রবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে জানান, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে মাসকটে বাংলাদেশের বৈদেশিক উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেনের বৈঠকে সার্কের বিষয়টি তোলা হয়েছিল। এ সময় বাংলাদেশ, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য সার্কের পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে ভারতের সহায়তা চায়।
তবে, ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, সার্কের কার্যক্রম পুনরুদ্ধারে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “দক্ষিণ এশিয়াতে সার্কের পথকে বাধাগ্রস্ত করছে একাধিক দেশ এবং তাদের কার্কলাপ।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশকে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিকে সাধারণভাবে না দেখে, এর গভীরে গিয়ে সমাধান করতে হবে।”
গত সপ্তাহে মাসকটে অনুষ্ঠিত ‘ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্স’ এর অষ্টম অধিবেশনে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক উপদেষ্টার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর বাংলাদেশ জানায়, সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ডাকা অত্যন্ত জরুরি এবং সেজন্য তারা ভারতীয় সহায়তা চায়।
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করতে ভারতের সঙ্গে আরও গভীর আলোচনা করতে চায়। বিশেষ করে, সার্কের সদস্য দেশগুলির মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
ভারত এবং বাংলাদেশের এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, সার্কের সফল কার্যক্রমের জন্য পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশগুলির অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, সার্ককে কার্যকর করতে হলে, সদস্যদেশগুলির মধ্যে আস্থার সম্পর্ক এবং সন্ত্রাসবাদবিরোধী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতার উন্নয়নে ভারতীয় সহায়তা চায়। তবে, পাকিস্তান এবং অন্যান্য সদস্যদেশের প্রেক্ষিতে কোনো সমঝোতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুবই সতর্ক। তারা তাদের অবস্থান সঠিকভাবে তুলে ধরতে চায়, যাতে সার্ক কার্যকরী হতে পারে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
এ মুহূর্তে, সার্কের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, সদস্যদেশগুলির মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা এবং স্থিতিশীল সম্পর্কের ওপর। ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে যে, পাকিস্তানসহ কোনো দেশের সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় গ্রহণ সার্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং এটি দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।