ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) এর সংবিধান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানির দিন ঘোষণা হল। ২৫ মার্চ এই ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট ( Supreme-Court)। এই মামলাটি একাধিক বছর ধরে চলছে এবং ফুটবল সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ২০২২ সালের মে মাসে ফুটবল প্রশাসনে বিশাল পরিবর্তন আসার পর থেকে এআইএফএফ (AIFF)-এর নতুন সংবিধান তৈরির কাজ চলছিল।
মামলার সূত্রপাত
২০২২ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট ভারতের ফুটবল ফেডারেশন (AIFF)-এর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রফুল প্যাটেল এবং তার নির্বাহী কমিটিকে তাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অপসারণ করেন। কারণ প্যাটেল তার তিনটি চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ করার পরেও এআইএফএফ নির্বাচনের আয়োজন করতে ব্যর্থ হন, যা তাকে পুনরায় নির্বাচনের অযোগ্য করে তোলে জাতীয় ক্রীড়া কোডের অধীনে। এর পর সুপ্রিম কোর্ট একটি তিন সদস্যের কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর (CoA) গঠন করে, যাতে এআইএফএফ-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনা করা হয়।
ফিফার নিষেধাজ্ঞা এবং এর পরবর্তী পরিস্থিতি
যতটা গুরুতর ছিল এই মামলার শুনানি, ততটাই মন্দ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল এআইএফএফ-এ। ২০২২ সালের ১৫ জুলাই, CoA একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে এবং সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়। কিন্তু এক মাস পর ১৬ আগস্ট, ফিফা এআইএফএফ-কে তৃতীয় পক্ষের অবৈধ প্রভাবের কারণে স্থগিত করে, যা ফিফা বিধির সরাসরি লঙ্ঘন। ভারত সরকারের হস্তক্ষেপের পর ২৭ আগস্ট ফিফা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে এবং এআইএফএফ প্রশাসকরা তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
নতুন প্রেসিডেন্ট এবং সাধারণ সম্পাদক
এরপর অকল্পনীয় একটি ঘটনা ঘটে। কল্যাণ চৌবে এআইএফএফ-এর নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন এবং শাজি প্রভাকরণ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।
সংবিধান চূড়ান্তকরণে চ্যালেঞ্জ
যদিও ২০২২ সালের জুলাই মাসে এআইএফএফ-এর খসড়া সংবিধান প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন পক্ষের মতপার্থক্যের কারণে তা চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়নি। ২০২৩ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট প্রাক্তন বিচারপতি এল. নাগেশ্বর রাও-কে নিযুক্ত করে যাতে তিনি সব পক্ষের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে একটি সুরাহা বের করতে পারেন। রাও একাধিক সভার মাধ্যমে একযোগিতার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন কিন্তু এআইএফএফ এখনও সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন প্রত্যাশা করছে।
সুপ্রিম কোর্টের আদেশ
“এই বিষয়গুলির চূড়ান্ত শুনানি ২৫.০৩.২০২৫ তারিখে বিকেল ২টায় অনুষ্ঠিত হবে।”
“আমরা প্রথমে এআইএফএফ সংবিধান চূড়ান্তকরণের বিষয়গুলি শুনবো।”
“ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন সম্পর্কিত বিষয়টি এআইএফএফ বিষয়টির পর পরই শোনা হবে।”
ফুটবল সম্প্রদায়ের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত
এই শুনানি নিয়ে ভারতীয় ফুটবল সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে। বিশেষত, কল্যাণ চৌবে এবং বর্তমান এআইএফএফ নির্বাহী কমিটির ভবিষ্যত কী হবে, তা এখন রীতিমতো উদ্বেগের বিষয়। এআইএফএফ -এর সংবিধান চূড়ান্তকরণের মাধ্যমে যদি ফুটবলের ব্যবস্থাপনা একটি অধিক গঠনমূলক এবং স্বচ্ছ পথে চলে তবে এটি ভারতীয় ফুটবলের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে।