কুম্ভ মেলায় মহিলাদের স্নানের ভিডিও বিক্রি! পুলিশ শুরু করেছে তদন্ত

কুম্ভ মেলা, পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব, যেখানে কোটি কোটি পুণ্যার্থী পাপ মুছতে এবং আত্মশুদ্ধি লাভ করতে আসেন। তবে এবারের কুম্ভ মেলা এক নতুন বিতর্কের…

Uttar Pradesh Police Files Complaint After Women’s Bathing Images & Videos from Maha Kumbh Sold on Instagram and Telegram

কুম্ভ মেলা, পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব, যেখানে কোটি কোটি পুণ্যার্থী পাপ মুছতে এবং আত্মশুদ্ধি লাভ করতে আসেন। তবে এবারের কুম্ভ মেলা এক নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সেখানে মহিলাদের স্নানের গোপন ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করে তা বিক্রি করা হচ্ছে টেলিগ্রাম চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। একদিকে যেখানে ধর্মীয় শুদ্ধি এবং পুণ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই মেলায় যোগ দেন, অন্যদিকে, কিছু মানুষ শোভনতা, সম্মান ও মানবাধিকারের প্রতি অগ্রাহ্যতা প্রকাশ করছে।

উত্তর প্রদেশ পুলিশ সম্প্রতি অভিযোগ করেছে যে, কিছু সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে কুম্ভ মেলায় স্নানরত মহিলাদের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিয়ো আপলোড করা হচ্ছে। এই ছবি এবং ভিডিয়োগুলি এমনভাবে ধারণ করা হয়েছে যাতে মহিলাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং সম্মানকে সুনিশ্চিতভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। অনেক সময় স্নানকালে বা পোশাক বদলানোর মুহূর্তে এই ছবি এবং ভিডিয়োগুলি তোলা হয়, যা গোটা সমাজের জন্য একটি ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়।

   

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিমের মাধ্যমে এই বিষয়টি নজরে আসে। এরপরই তদন্ত শুরু হয় এবং বেশ কিছু ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে মহিলাদের স্নানের ভিডিয়ো এবং ছবি আপলোড করা হয়েছে। পুলিশ এখন মেটা (Facebook, Instagram-এর মালিক সংস্থা) থেকে সাহায্য চাইছে এই অ্যাকাউন্টগুলো শনাক্ত করার জন্য।

এছাড়া, টেলিগ্রাম চ্যানেলেও স্নানের ভিডিয়ো বিক্রি করা হচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকার বিনিময়ে। এসব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রাচীন বা পুরনো ভিডিয়োগুলিও বিক্রি করা হচ্ছে, যা কুম্ভ মেলায় অংশ নেওয়া মহিলাদের সম্মানহানির জন্য দায়ী। এই ঘটনা পুরোপুরি মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি নারী নির্যাতনের একটি ভয়াবহ রূপ। মহিলাদের সম্মান ও গোপনীয়তার প্রতি এই আচরণ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং দুঃখজনক।

পুলিশ এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এবং আপত্তিকর ছবি ও ভিডিয়ো বিক্রি বা শেয়ার করার সাথে যুক্ত চ্যানেলগুলির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় আইনে এমন অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে, এবং পুলিশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই ঘটনায় সমাজের দায়িত্বশীল মানুষদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ধর্মীয় বা সামাজিক যেকোনো উৎসবে যদি এমন অমানবিক ঘটনা ঘটে, তাহলে তা গোটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। সকলকে সচেতন হতে হবে এবং একটি সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে নারীরা নিরাপদ, সম্মানিত এবং তাদের গোপনীয়তা রক্ষা পাবে।

অন্তত ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে এমন ধরনের ঘটনায় সবাইকে একত্রিত হয়ে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং সমাজের ভালো জন্য একত্রে কাজ করতে হবে।