মহাকুম্ভে স্নানের নামে ভারতে অনুপ্রবেশ, ধৃত বাংলাদেশি

মহাকুম্ভ মেলায় পুণ্যস্নান করতে আসা এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম ধীরেন হালদার, যিনি বাংলাদেশের যশোর জেলার বাসিন্দা। গত মঙ্গলবার হাবড়া স্টেশনের মোড়…

মহাকুম্ভ মেলায় পুণ্যস্নান করতে আসা এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম ধীরেন হালদার, যিনি বাংলাদেশের যশোর জেলার বাসিন্দা। গত মঙ্গলবার হাবড়া স্টেশনের মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। পুলিশ সুত্রে খবর,কুম্ভে স্নান করবেন বলেই জাল পাসপোর্ট থেকে ভুয়ো আধার, সবই তৈরি করিয়েছিলেন ৬৭ বছরের বাংলাদেশের প্রৌঢ়। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধীরেন হালদারকে হাবড়া স্টেশনের কাছে সন্দেহজনকভাবে ঘুরতে দেখার পর তল্লাশি চালানো হয়। তার ভাষার উচ্চারণ ও অন্যান্য সৃষ্ট উপাদান দেখে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ধীরেনের কথা বলার সময়, তার বাংলাদেশীর মতো উচ্চারণ, পুলিশকে সন্দেহের দিকে নিয়ে যায়।

   

তদন্তে দেখা গেছে, ধীরেন বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে এসেছিলেন, কিন্তু তিনি ভারতীয় নাগরিকত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক ভুয়ো নথি তৈরি করেছেন। তার কাছে জাল আধার কার্ড, নাগরিকত্ব কার্ড এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে ধীরেন জানান, তিনি কুম্ভ মেলায় পুণ্যস্নান করতে ভারতে এসেছিলেন। তবে পুলিশ এর মধ্যেই আরও তদন্ত চালাচ্ছে এবং তার প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে।

পুলিশের তদন্তে আরও উদ্ধার হয়েছে, ধীরেন একাধিকবার ভারতে এসেছেন এবং প্রতি বার তিনি ভুয়ো নথি তৈরি করেছেন। বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও ভিসা থাকার পরেও, তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আধার কার্ডসহ অন্যান্য নথি তৈরি করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি হাবড়া ও তার আশপাশের এলাকায় জমি কিনেছেন এবং ভারতীয় ব্যাঙ্কে তার নামেই একাধিক অ্যাকাউন্টও খুলেছেন।

এছাড়া ধীরেন তার পরিবারের সদস্যদের জন্যও একই ধরনের জাল নথি তৈরি করেছিলেন। এই নথি ব্যবহার করে তিনি বিভিন্ন সরকারি সুবিধা ও নাগরিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তিনি এই সব নথির মাধ্যমে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ভারতীয় সিস্টেমে প্রবেশ করেছিলেন, তবে তার উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার নয়।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়, বিশেষ করে কট্টরপন্থীদের নির্যাতনের ফলে বহু মানুষ ভারতে আশ্রয়ের জন্য আসছেন। ধীরেনের ভারত আসার পেছনে এরকম কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় প্রেক্ষাপট থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তিনি কেবলমাত্র কুম্ভে স্নান করতেই ভারতে এসেছিলেন, নাকি অন্য বড় পরিকল্পনা ছিল—এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত চলছে।

বুধবার তাকে বারাসত আদালতে পেশ করা হলে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন “১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আধার কার্ড তৈরি করতে ৫ হাজার টাকা লেগেছিল।”পুলিশ জানিয়েছে বৈদেশিক আইন-সহ ভারতের ভুয়ো পরিচয়পত্র বানানোর অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।