‘লোক ঠকাচ্ছে বিজেপি। আমাদের জন্য সিপিএম ভাবে। আর নয় জয় শ্রী রাম’-এমনই বলছেন গেরুয়া শিবির (BJP) ত্যাগ করা শতাধিক। হুড়মুড়িয়ে দলবদল চলছে। এই পরিস্থিতি স্বীকার করছেন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। তবে তাদের দাবি শক্তি ধরে রাখতে সাংগঠনিক কাঠামোতে জোর দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের উল্টো ছবি আরও এক বাংলাভাষী প্রধান রাজ্য ত্রিপুরায়। এ রাজ্যে শাসকদল বিজেপি ছেড়ে প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএমে যোগদান চলছে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখলেও দেখা গেছে সিংহভাগ আসনে উপজাতি দল ভোট কেটে নেওয়ায় সিপিআইএম সরকার দখল করতে পারেনি। সেই উপজাতি দল তিপ্রা মথা এখন বিজেপি সরকারের শরিক।
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার পতনের পর বাংলায় সিপিআইএম শূন্য বিধানসভা, সাংসদও নেই। আর ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় বাম জমানার পতনের পর থেতে বাম শিবির মূল বিরোধীপক্ষ। ক্রমাগত ভাঙন রুখে সংগঠন বৃদ্ধিতে নজর দিয়েছে সিপিআইএম।
শাসক বিজেপিও রাজ্য জুড়ে সাংগঠনিক কাঠামো মজবুত করতে পোড় খাওয়া সংঘ প্রচারক ও প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষসহ তাবড় তাবড় নেতাদের এনেছে। মিস কলে লক্ষাধিক সদস্য সংগ্রহের কোটা পূর্ণ বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বিরোধী দলনেতা তথা সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরীর পাল্টা দাবি জনতা বিজেপি থেকে মুখ ঘোরাচ্ছেন।
সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির দাবি,সিপাহীজলা জেলায় বুধবার সোনামুড়া ব্লকে বিজেপি ছাড়ার হিড়িক লেগেছে। মানুষদের বিজেপি সম্মান দেয় না এমনই বলে দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী সহ ২৫ জন বাম শিবিরে যোগ দিলেন। রাজ্যে বাম জমানার মতো পুরনো পেনশন প্রথা চালুর দাবিতে আগরতলায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরাট মিছিল বের হয়। দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শান্তিরবাজারে দলে দলে বিজেপি ছাড়ার পর্ব চলছে।
অন্যদিকে পার্বত্য ত্রিপুরায় শক্তিশালী তিপ্রা মথা সরকারের শরিক হলেও নেতা নেত্রীদের মধ্যে ভাঙন স্পষ্ট। পৃথক দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। মথা ছেড়ে বের বামমুখী উপজাতি জনতার একাংশ। বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বও, পার্বত্য এলাকায় দলীয় সংগঠনের খামতি স্বীকার করছেন। তবে তাদের দাবি, পার্বত্য এলাকায় সিপিআইএমের সেই শক্তিশালী জমি ভেঙে গেছে। বাম নেতারা স্বীকার করেছেন, এই দূর্বলতা কাটানোর চেষ্টা চলছে। সেখানে ফের বাড়ছে সংগঠন।
ত্রিপুরায় কি রাজনৈতিক ছবি ফের বদলে যাচ্ছে?