পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার ‘মৃত্যু কুম্ভ’ (Mahakumbh 2025) মন্তব্যের জন্য বিজেপি নেতারা তীব্র সমালোচনা করেছেন। তবে তাকে সমর্থন জানিয়েছেন স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী, উত্তরাখণ্ডের যোগীশ পীঠের ৪৬তম শংকরাচার্য।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত মহা কুম্ভ মেলা নিয়ে তীব্র মন্তব্য করেন। সেখানে যে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে এবং অন্যান্য সমস্যা যেমন দীর্ঘ সময় ধরে ট্র্যাফিক, দূষিত জল সেগুলোকে ‘খারাপ পরিকল্পনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি মহা কুম্ভ মেলা নিয়ে মন্তব্য করেন, ‘এটা মৃত্যুর কুম্ভ… আমি মহা কুম্ভকে সম্মান করি, গঙ্গা মা’কে সম্মান করি, কিন্তু এখানে কোনো পরিকল্পনা নেই… কত মানুষ উদ্ধার করা হয়েছে?’
বিজেপি নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ হিসেবে উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তবে, স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী, যিনি মহা কুম্ভ মেলা পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় জনসমাবেশ এর অভাবের কথা বলছেন, মমতার মন্তব্যের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, ‘এখানে ৩০০ কিলোমিটার ট্রাফিক ছিল। এটা যদি অব্যবস্থাপনা না হয়, তাহলে আর কী বলা যাবে? মানুষকে তাদের লাগেজ নিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে জল স্নানের জন্য আসছিল তা পয়ঃনিষ্কাশন জল মিশ্রিত ছিল এবং বিজ্ঞানীরা বলছেন যে এই জল স্নানের জন্য উপযুক্ত নয়। তবুও কোটি কোটি মানুষকে এই জল দিয়ে স্নান করতে বাধ্য করা হয়েছে।’
স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী আরও বলেন, ‘আপনার কাজ ছিল কিছুদিনের জন্য নালা বন্ধ করা অথবা সেগুলো সরিয়ে দেবার ব্যবস্থা করা যাতে মানুষ বিশুদ্ধ জল পায়। ১২ বছর আগে জানা গিয়েছিল যে মহা কুম্ভ আসবে, তবুও কেন এর জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি?’
স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী আরও অভিযোগ করেন যে, যখন জানতই এত মানুষ আসবে এবং স্থান সীমিত থাকবে, তখন পরিকল্পনা তৈরি করা উচিত ছিল। তবে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি, তার বিপরীতে মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে, ‘কুম্ভ মেলার সময় জনগণের মৃত্যুর ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে, যা গুরুতর অপরাধ।’
বিজেপির মুখপাত্র প্রদীপ ভাণ্ডারি মমতার মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘এটা সনাতন ধর্ম এবং হিন্দুদের প্রতি ঘৃণা।’ তিনি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদবের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এরা সনাতনের ঐক্যের ভয় পায় এবং তাদের হিন্দু বিদ্বেষ স্পষ্ট।’
অপরদিকে, আখিল ভারতীয় সন্ন্যাসী সমিতির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক স্বামী জিতেন্দ্রানন্দ সরস্বতী বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অস্থির হয়ে পড়েছেন, কারণ তিনি দেখছেন কীভাবে পশ্চিমবঙ্গ, ঝারখণ্ড, বিহার, ওড়িশা ও অন্যান্য পূর্ব ভারতের হিন্দুরা মহা কুম্ভে আসছে।’
বিরোধী নেতারা দাবি করেছেন যে, মহা কুম্ভে পদদলিত হওয়ার ঘটনা সরকারের যে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করেছে তা সঠিক নয়, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।