বাংলাবাজারে আজ এক নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম (Acharya Pramod Krishnam) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির (Mamata Banerjee) ‘মৃত্যু কুম্ভ’ (Mrityu Kumbh) মন্তব্যের উপর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “মমতা ব্যানার্জি যে একটি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন, তবুও হিন্দু অনুভূতিতে আঘাত করা তাঁর জন্য এক ধরনের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি বলেন, “মমতা ব্যানার্জি যদি ‘বন্দে মাতরম’ বা ‘ভারত মা কি জয়’ শব্দ শোনেন, তাহলে তাঁর রাগ চরমে পৌঁছায়।”
এই মন্তব্যের পর আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম মমতা ব্যানার্জির দিকে তীব্র আক্রমণ শানাতে থাকেন। তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি ভগবান রামের নাম সহ্য করতে পারে না, সে কীভাবে মহাকুম্ভের গুরুত্ব বুঝবে? মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যু কুম্ভ’ বলা অত্যন্ত দুঃখজনক।” আচার্য আরও বলেন, “যারা হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করেন, তারা মুসলিম বা অন্য কোনো ধর্মের মানুষ নয়, তারা এক হিন্দুই।”
আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমের এই তীব্র মন্তব্য মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে একটি রাজনৈতিক বিতর্কের জায়গা তৈরি করেছে। তাঁর বক্তব্যে যে তীব্র সমালোচনা রয়েছে, তা পরিষ্কারভাবেই বোঝানো হয়েছে যে মমতা ব্যানার্জির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মন্তব্যগুলি জনমতকে বিভক্ত করছে।
তবে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কেবল ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্যই সমালোচিত হচ্ছেন না, তার মন্তব্য মহাকুম্ভ মেলা এবং তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি, তিনি মহাকুম্ভ মেলাকে ‘মৃত্যু কুম্ভ’ হিসেবে উল্লেখ করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
মমতা ব্যানার্জি বলেন, “এটা হচ্ছে ‘মৃত্যু কুম্ভ’। আমি মহাকুম্ভকে শ্রদ্ধা করি, গঙ্গা মায়ের প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। কিন্তু এখানে কোনো পরিকল্পনা নেই… কতজনকে উদ্ধার করা হয়েছে? তবে সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, কুম্ভে আসা সচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য ছাদ, ক্যাম্প, বিশ্রামকক্ষের ব্যবস্থা রয়েছে, যা এক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। কিন্তু গরীব মানুষের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।”
এদিকে, সমাজবাদী পার্টির (এসপি) সাংসদ দিম্পল যাদবও মহাকুম্ভ মেলায় ঘটে যাওয়া পদদলিত ঘটনাকে নিয়ে বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই মহাকুম্ভ মেলার পদদলিত ঘটনায় মৃতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করবে। যতটা সম্ভব মৃতদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করতে হবে।”
মমতা ব্যানার্জির ‘মৃত্যু কুম্ভ’ মন্তব্যটি রাজনীতিকদের মধ্যে আরও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এটি কি একটি রাজনৈতিক মঞ্চে তীব্র প্রতিযোগিতা তৈরির চেষ্টা, না কি এটি ভারতীয় হিন্দু ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানের অভাবের প্রমাণ?
তবে, আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম যে মন্তব্য করেছেন, তা অনেকের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষত, তার বক্তব্যে হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার কথা উঠে এসেছে এবং মমতা ব্যানার্জির মন্তব্যের প্রতি এক ধরনের প্রতিবাদও ব্যক্ত করা হয়েছে। অনেক ধর্মীয় নেতাই আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, এমন মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মমতা ব্যানার্জি কি তার ‘মৃত্যু কুম্ভ’ মন্তব্যের জন্য কোনও স্পষ্ট উত্তর দেবেন? অথবা এই বিতর্কের মাধ্যমে রাজনীতির ময়দানে তার অবস্থান আরো শক্তিশালী হবে? সামনের দিনগুলোতে পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতির এই আলোচিত বিষয়ে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, যা রাজ্য এবং দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করবে।