কলকাতা: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অভিযুক্ত পার্থকে ফের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারেই ফিরে যেতে হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাঁর। তবে, আপাতত তাঁকে নতুন কোনো পরীক্ষা করানো হয়নি। নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা আগের মতোই চলবে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পার্থের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন। ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি, জেলে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর পার্থ আদালতে পিটিশন দাখিল করেন। সেখানে তিনি বলেন, এসএসকেএম হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না এবং তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার অনুমতি দেওয়া হোক। আদালত এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট চেয়ে নিয়ে পার্থকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেয়, তবে শর্ত ছিল যে, চিকিৎসার খরচ নিজেকে বহন করতে হবে।
২৮ জানুয়ারি, আদালতের নির্দেশে পার্থকে এসএসকেএম থেকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলতে থাকে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতে জানায় যে, পার্থ সুস্থ আছেন এবং শীঘ্রই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর, ১৮ ফেব্রুয়ারি, পার্থকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি আবারও জেল হেফাজতে থাকবেন। গত আড়াই বছর ধরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলে রয়েছেন পার্থ। ২০২২ সালের ২২ জুলাই, কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে সিবিআইও তাঁকে গ্রেফতার করে।
এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি এবং হাই কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল। ইডি অভিযোগ করেছিল যে, পার্থ তার প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে চাইছেন। হাই কোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী মন্তব্য করেছিলেন, “এসএসকেএম প্রতিটি প্রভাবশালীর জন্য নিরাপদ জায়গা।” তবে, পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে পার্থকে ভুবনেশ্বরের এমস-এ পাঠানো হয়, যেখানে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
পার্থের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিটি পদক্ষেপ আদালতের নির্দেশে নেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।