গত ৪৮ ঘন্টায় ১৭০ পাকিস্তানিকে বহিষ্কার করেছে বিভিন্ন উপসাগরীয় দেশ। যার মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, এবং অন্যান্য দেশ। এর মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাঁরা করাচি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পাকিস্তানি পুলিশ তাদের আটক করেছে। পাকিস্তানের সংবাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব পাকিস্তানি নাগরিককে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে। যেমন মাদক পাচার, অবৈধ বসবাস, ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়া, ভিক্ষাবৃত্তি, স্পন্সরের ছাড়পত্র ছাড়া কাজ করা, এবং চুক্তি ভঙ্গের মতো অপরাধ।
কী কারণে পাকিস্তানিদের বহিষ্কার করা হচ্ছে?
সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ ৯৪ জন পাকিস্তানিকে বিভিন্ন অপরাধে বহিষ্কার করেছে। এছাড়াও ওমান, থাইল্যান্ড, ইরাক, যুক্তরাজ্য, সাইপ্রাস, ইন্দোনেশিয়া, মাউরিটানিয়া, তানজানিয়া এবং কাতার থেকেও কিছু পাকিস্তানিকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিশেষ করে, কাতারে যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবের কারণে দুই পাকিস্তানি নাগরিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া অপরাধ ও ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ৩৯ জন পাকিস্তানিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও ফেরত পাঠানো হয়েছে।
অন্য দেশগুলোর অবস্থাও অনুরূপ
পাকিস্তানের সংবাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অনুযায়ী, ৭ জন পাকিস্তানি নাগরিককে ব্ল্যাকলিস্ট করা হয়েছিল, এবং তাঁরা বিভিন্ন আর্থিক ও অভিবাসন সংক্রান্ত অপরাধে যুক্ত ছিল। এছাড়া, ৫৯ জন পাকিস্তানি নাগরিককে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাঁরা বিভিন্ন দেশ যেমন যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, কেপ ভার্দে, বাহরাইন, কাতার এবং মালাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছিলেন। তাঁদের ভিসা এবং যাত্রার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের অভাব ছিল।
ইউমরা তীর্থযাত্রীদের অবস্থা
২১ জন পাকিস্তানি তীর্থযাত্রীকে তাদের অব্যবস্থাপনা এবং অপ্রত্যাশিত অর্থের কারণে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া সাইপ্রাস এবং যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পথে ৪ জন শিক্ষার্থী এবং ইতালিতে আশ্রয়ের আবেদনকারী এক পাকিস্তানিকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মানবপাচারের সন্দেহ
পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি কারাচি বিমানবন্দরে ৪ জন মহিলাকে আটক করেছে। তারা সৌদি আরব যাওয়ার পথে ছিলেন এবং সন্দেহ করা হচ্ছে যে, তারা শ্রমিক হিসেবে পাচারের শিকার হতে পারেন। তাদের পূর্বের সৌদি আরব সফর ও এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য থেকে এটি অনুমান করা হয়েছে যে, এক চক্রের সদস্য হিসেবে তাদের পাচার করা হচ্ছিল।
এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী পাকিস্তানি অভিবাসীদের জন্য একটি সতর্কতা। বিদেশে অবৈধ বসবাস এবং অপরাধে জড়িত হওয়া একদিকে যেমন তাদের জীবনকে বিপদগ্রস্ত করে, অন্যদিকে দেশেও তাদের ফেরত পাঠানো এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।