রাজ্যের শাসকদলকে ‘ভাইরাস’ বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। শনিবার নদিয়ার শান্তিপুরে একটি সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। সুকান্তবাবু বলেন, ‘এই ভাইরাস যে ওষুধে মরে, সেই ওষুধ দিন। বিজেপি আপনার সাথে আছে।’ তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
গত ১২ জানুয়ারি শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তৃণমূলের গুন্ডারা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতি-র ঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। চেয়ার টেবিল ভাঙা হয়। তারা নেমপ্লেটও ভেঙে দেয়। এর পাশাপাশি, জাতীয় পতাকা মাটিতে ফেলে তাকে মাড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগও ওঠে। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সুকান্ত মজুমদার শান্তিপুরে মিছিল করেন।
সুকান্তবাবু বলেন, ‘আমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতির দফতের নেমপ্লেট খুলে নিয়েছে তৃণমূল। এর পালটা দৃশ্য আমরা দেখতে চাই। পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, এখন সময় এসে গিয়েছে ২৬-এর লড়াইয়ের।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূল যদি ঢিল মারে, পাটকেল মারার ব্যবস্থা করুন।’ সুকান্ত মজুমদার আরও দাবি করেন, ‘দুদিন আগে এক তৃণমূল নেতা বলেছে, ২৬-এর ভোটে রেফারি থাকবে না। আমি তৃণমূল নেতাদের বলব, মাঝখান থেকে পুলিশটাকে সরিয়ে দিন। বিজেপি মেরে আপনাদের পা ভেঙে দেবে।’
তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় অভিযোগ করে বলেন, ‘তৃণমূল হল একটা ভাইরাস। একে যে ওষুধ দিলে ভালো হয়, আপনিই দিন। ভারতীয় জনতা পার্টি আপনার সাথে আছে।’ তার এই মন্তব্য রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে। বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে চলা উত্তেজনা দিন দিন তীব্র হচ্ছে।
সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের নেতারা এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে পাল্টা বক্তব্য দেন। তাদের মতে, রাজ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে এবং কোনো ধরনের অশান্তি সৃষ্টি করা উচিত নয়। তবে সুকান্তবাবু তার মন্তব্যে স্পষ্ট করেছেন যে, আগামী নির্বাচনে তৃণমূলকে পরাজিত করতে বিজেপি কোনো কসরত ছাড়বে না।
শান্তিপুরে সুকান্তবাবু পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে পৌঁছে নেমপ্লেট ফের লাগান। তিনি জানান, ‘তৃণমূলের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আমরা শক্ত অবস্থান নেব। আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির দফতরের সম্মান পুনঃস্থাপন করতে হবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুকান্ত মজুমদারের এই মন্তব্য রাজ্যের বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের এক নতুন অধ্যায় সূচনা করল। একদিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ, অন্যদিকে বিজেপি এই ধরনের মন্তব্য করে তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করতে চাচ্ছে।
রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সুকান্ত, বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে এই তরজা আগামী দিনগুলোতে আরও তীব্র হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।