সরকারি হাসপাতালে মেশিনের অভাবে বন্ধ ক্যান্সার পরীক্ষা, এক্স-রে পরিষেবা

রাজ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে (Government Hospital) রোগীমৃত্যু ও সেবা সংকট নিয়ে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ তুলতে ব্যস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তার পাশাপাশিই একে একে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে…

Patients Left Lying Outside Due to Lack of Beds, Inhumane Scene at Baruipur Subdistrict Hospital

রাজ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে (Government Hospital) রোগীমৃত্যু ও সেবা সংকট নিয়ে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ তুলতে ব্যস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তার পাশাপাশিই একে একে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পরিকাঠামোর ভয়াবহ অবস্থা সামনে আসছে। কলকাতা ও জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পরিকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, সেখানে ক্যান্সার সনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় দুটি যন্ত্রই অকেজো হয়ে পড়েছে। এই যন্ত্র দুটি একে অপরের থেকে আলাদা পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে। এর মধ্যে একটি যন্ত্র পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে এবং সেটি মেরামত করারও কোনো ব্যবস্থা নেই। অপরটি ব্যবহার করার জন্য যে রাসায়নিক প্রয়োজন তা শেষ হয়ে গেছে। আর রাসায়নিক কেনার বরাত নিয়ে চলছে দড়ি টানাটানি। ফলস্বরূপ, রোগীরা বাইরে গিয়ে পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছেন।

   

কলকাতার SSKM হাসপাতালের পরিপ্রেক্ষিতেও সমস্যা রয়েছে। সেখানে ককলিয়া প্রতিস্থাপন বন্ধ হয়ে গেছে। জন্মগত বধিরতা দূর করতে এই অস্ত্রোপচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অস্ত্রোপচার শেষ হওয়ার পর রোগীকে স্পিচ থেরাপি দিতে হয়, যা বেশ ব্যয়বহুল। রোগীরা থেরাপিস্টের কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা করছেন। ফলে ককলিয়া প্রতিস্থাপন সাফল্য লাভ করতে পারে না। সাধারণত ছোট বয়সী রোগীদের এই অস্ত্রোপচার করা হয়, কিন্তু তারা নিজেরা থেরাপিস্টের কাছে যেতে পারেন না। এবং বাবা-মা-রাও তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করছেন না। যদিও জেলা হাসপাতালগুলোতে সরকারি থেরাপিস্টরা আছেন, কিন্তু তাদের কাছে রোগীরা আসছেন না।

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন ৬ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। নর্দমার জল ঢুকে যাওয়ার কারণে এটি অকেজো হয়ে পড়েছে। রোগী এবং তাদের পরিবারের লোকজনদের জন্য এটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালের সুপার পলাশ দাস জানিয়েছেন যে, স্বাস্থ্য ভবনে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রোগীরা এখন বাইরে গিয়ে এক্স-রে করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে অনেক গরিব মানুষ সমস্যায় পড়ছেন।

চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, আরজি কর আন্দোলনে চিকিৎসকরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারপর থেকেই সরকার তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ। আন্দোলনের জন্য চিকিৎসকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এই অব্যবস্থা থেকে মানুষকে কীভাবে রক্ষা করা হবে, তা নিয়ে সরকারের কোনো চিন্তা নেই। হাসপাতালের মেশিনগুলো খারাপ হয়ে পড়েছে, অথচ তার মেরামতের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এতে রোগীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা মানুষের জন্য, কিন্তু সেই পরিষেবার মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে।